Home বিনোদন রংপুরের ঐতিহ্যবাহী খাবার সিঁদল

রংপুরের ঐতিহ্যবাহী খাবার সিঁদল

সিঁদল রংপুরের প্রতিটি পরিবারের কাছেই কমবেশি পরিচিত। ছোট মাছের শুকনো শুঁটকি আর কচুর ডাটা দিয়ে তৈরি হয় সিঁদল। সঙ্গে পর্যায়ক্রমে আদা, রসুন, হলুদ, সরিষার তেল, খাবার সোডা আর এলাচও দিতে হয়। সম্পূর্ণ আলাদা বৈশিষ্ট্য ও স্বাদের কারণে সিঁদল রংপুর অঞ্চলের মানুষের একটি অতিপ্রিয় খাবার। এটা শীতকাল এবং বর্ষার মৌসুমে সকালের খাবারে গ্রামাঞ্চলে বেশি খেতে দেখা যায়।
মূলত মলা, পুঁটি জাতীয় বিভিন্ন ধরনের ছোট মাছ ব্যবহৃত হয় সিঁদল তৈরিতে। প্রথমে ছোট মাছগুলো ভালো করে ধুয়ে কুটে পরিষ্কার করে সপ্তাহখানেক কড়া রোদে শুকিয়ে শুঁটকি করে নিতে হয়। পরে মাছের শুঁটকিগুলো ঢেঁকিতে নয়তো উরুনগান (বড় আকারের কাঠের হামানদিস্তা) বা শিল-পাটায় আধা গুঁড়ো করে নিতে হয়। আবার ব্লেন্ডারেও শুঁটকি আধা ভাঙা করে নেওয়া যায়।
শুঁটকি আধা ভাঙা করা শেষ হলে একই পরিমাণ সাদা মানকচু বা কালো কচুর ডাঁটা ধুয়ে নিয়ে কাঁচা অবস্থাতেই বাটতে হয়। কচুবাটার সঙ্গে মলা, ডারকা বা পুঁটি মাছের আধা ভাঙা গুঁড়া, প্রয়োজন মতো আদা, রসুন এবং কিছু পরিমাণ খাবার সোডার মিশ্রণে ধীরে ধীরে সবকিছুর সঙ্গে মেশানো হয়। সব মেশানো হয়ে গেলে হলুদ ও সরিষার তেল দিয়ে মেখে হাত দিয়ে গোল বা চ্যাপটা করে এক সপ্তাহ কড়া রোদে শুকাতে হবে। ডালা বা কুলায় জাল দিয়ে ঢেকে (যাতে কাক বা পাখি খেতে না পারে) শুকিয়ে এগুলো একটু শক্ত হয়ে গেলে তৈরি হয়ে যায় সিঁদল। অনেকে আবার মালা করে শুকিয়ে নেন। এভাবে তৈরি সিঁদল বহুদিন রেখে খাওয়া যায়।
সিঁদল তেলে ভেজে নিয়ে পরে প্রয়োজন মতো শুকনা মরিচ, রসুন, পেঁয়াজ, লবণ দিয়ে ভর্তা করে খাওয়া হয়। কোথাও কোথাও তেলে না ভেজে কলার পাতায় মোড়ানো সিঁদল চুলার আগুনে পোড়ানো হয়। পরে কলার পাতা কালো রং ধারণ করলে সিঁদল বের করে প্রয়োজন মতো শুকনা মরিচ, রসুন, পেঁয়াজ, লবণ দিয়ে ভর্তা করা হয়।-ফেসবুক