রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা কারাবন্দি অ্যালেক্সি নাভালনির মুক্তির দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন তার সমর্থকরা। এ সময় তিন হাজারেরও বেশি নাভালনি সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনিকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
শনিবার(২৩জানুয়ারি) রাজধানী মস্কোসহ ৯০টির মতো স্থানে এ সমাবেশ হয়েছে।
বিক্ষোভে কয়েক হাজার নাভালনি সমর্থক অংশ নেন। তারা নাভালনির মুক্তির দাবি জানান। শনিবারের এসব সমাবেশ ভাঙতে পুলিশ শক্তি প্রয়োগ করেছে।
গত সপ্তাহে জার্মানি থেকে ফেরার পরই গ্রেপ্তার হওয়ায় সমর্থকদের বিক্ষোভের ডাক দেন নাভালনি। মস্কোতে লাখো বিক্ষোভকারী অংশ নিয়ে নাভালনির মুক্তির দাবি জানান। এ সময় পুলিশ হামলা চালায়। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।
নাভালনির স্ত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের দেওয়া এক পোস্টে জানান, পুলিশ তাকে ভ্যানে করে নিয়ে গেছে। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
মস্কোর কেন্দ্রস্থলে অন্তত ৪০ হাজার লোক জমায়েত হয়েছিলেন। গত কয়েক বছরে রাশিয়ার রাজধানীতে এত বড় অননুমোদিত সমাবেশ আর হয়নি বলে জানিয়েছেন তারা।
এখানে পুলিশ যাকে সামনে পেয়েছে, তাকেই ধরে ভ্যানে তুলে নিয়ে গেছে।
তবে মস্কোর জমায়েতে মাত্র চার হাজার লোক হয়েছিল বলে দাবি করেছে রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রয়টার্সের হিসাব নিয়ে প্রশ্ন তুলে ওই সংখ্যা অত্যন্ত বেশি ছিল বোঝাতে ব্যঙ্গাত্মক উক্তি ব্যবহার করেছে বলে বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে।
প্রতিবাদের আগের দিনই নাভালনির কিছু রাজনৈতিক মিত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল; অন্যদের বিক্ষোভ চলাকালে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রতিবাদ পর্যবেক্ষণকারী গোষ্ঠী ওভিডি-ইনফো জানিয়েছে, রাশিয়াজুড়ে অন্তত এক হাজার ৬১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে মস্কো থেকে ৫১৩ জন ও সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে ২১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
রাশিয়ার প্রায় ৭০ শহর ও নগর থেকে প্রতিবাদকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানাগেছে।
জার্মানি থেকে রাশিয়ায় ফেরার পর ১৭ জানুয়ারি নাভালনিকে গ্রেপ্তার করা হয়। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কঠোর সমালোচক অ্যালেক্সাই নাভালনি চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফিরলে ওই দিনই তাকে বিমানবন্দরে আটক করা হয়। প্যারোলে হাজিরা দিতে ব্যর্থ হওয়ার একটি মামলায় তাকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠান মস্কোর একটি আদালত।
নাভালনিকে গত বছর বিষপ্রয়োগে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। যদিও এ বিষয়টি ক্রেমলিন বারবার অস্বীকার করেছে। তবে সাংবাদিকদের অনুসন্ধানী রিপোর্টে নাভালনিকে বিষ প্রয়োগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
গত বছর আগস্টে একটি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে সার্বিয়া থেকে মস্কো ফেরার সময় এককাপ চা পানের পরই অসুস্থ হয়ে কোমায় চলে গিয়েছিলেন নাভালনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে জার্মানি নিয়ে যাওয়া হয়।
পরে জার্মানিতে পরীক্ষায় জানা যায়, সোভিয়েত আমলে তৈরি বিষাক্ত নার্ভ এজেন্ট নোভিচক দিয়ে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল।
-খবর আলজাজিরা, ওভিডি-ইনফো।