১২ শয্যার হাসপাতালে বেড নেই ১ টিও চিকিৎসা না হওয়ায় রোগীও আসে না। ১ জন সহকারী নার্স দিয়ে চলে হাসপাতালের কার্যক্রম নাজমুল হোসেন চট্টগ্রাম: বাংলাদেশে রেলওয়ে হাসপাতাল। অবস্থান হালিশহর সিজিডি ( পোর্ট কলোনি রোড)। কর্মস্থলে কোন দুর্ঘটনায় আহত বা অন্য কোন কারণে অসুস্থ রেল কর্মকর্তা-কর্মচারিদের চিকিৎসা সেবার জন্য এই হাসপাতাল। সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা গেল কেবল নামটা ছাড়া কার্যত আর কিছুই নেই এই হাসপাতালের। না চিকিৎসা সেবা, না চিকিৎসক। নেই ঔষধ। মাত্র কয়েকজন কর্মচারি সেখানে অলস সময়ে পার করছেন। সবখানে জরাজীর্ণ অবস্থা বিরাজমান। অফিস অর্ডার দিয়ে ইনডোর সেবা বন্ধ করে দিয়েছে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে ঢুকতেই দেয়ালে সাঁটানো ডিউটি রোস্টার। তা ১৯ এপ্রিল ২০২০ সালের। রোস্টারে ৩ জন ওয়ার্ড সেবক, ১ জন চৌকিদার ও ৪ জন ক্লিনারের ডিউটি দেওয়া আছে। মাহফুজা বেগম ওয়ার্ডের সেবিকা, মঞ্জুর আলম জাহেদ সেবক, রিংকু দে সেবক, মুকুল হোসেন চৌকিদার এবং মো ওমর ফারুক, অজিত কুমার, বিশু, দুলুরানী নাথ ক্লিনার। ২০০৪ সাল থেকে এখানে জুনিয়র নার্স পদে আছেন বাবুল চন্দ্র দাস। ৯ ফেব্রুয়ারিতে তিনি অবসরে যাবেন। বাবুল চন্দ্র দাস জানান, এখানে কোনো প্রকার ঔষধ নেই। এই হাসপাতাল ১২ শয্যার। নেই কোন চিকিৎসা সরঞ্জাম। হাসপাতালে জরুরি রোগীদের জন্য ছিলো ইনডোরে ভর্তির ব্যবস্থা। আর নিয়মিত বিভাগ হিসেবে আউটডোর। অপারেশন থিয়েটার বন্ধ। সর্বশেষ কখন সেটার দরজা খোলা হয়েছিল কেউ জানেনা। দীর্ঘদিন ধরে তালা ঝুলছে হাসপাতালের এক্সরে রুমেও। অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, এই হাসপাতালে কোন ঔষধ আসে না অথবা বরাদ্দ ঔষধ লোপাট হয়ে যায় নানা কৌশলে। সরজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালটির সেবিকা এবং কর্মীরা অলস সময় পার করছেন। হাতে গোনা কয়েকজন কর্মচারি। কোন রোগী নেই। বিভিন্ন আসবাবপত্র ও মেডিকেল সরঞ্জামের খারাপ অবস্থা। হাসপাতালটির ছাদ দিয়ে ভিতরে পানি পড়ে। ৩ জন ওয়ার্ড বয়, ১ জন চৌকিদার ও ৩ জন সুইপার আছে এখানে। এখানে রান্না করার জন্য ১জন বাবুর্চি ছিলো তাকেও সিআরবি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখানকার ১ জন ওয়ার্ড বয়ও সিআরবি হাসপাতালে করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে । এখানে পুরুষ এবং মহিলা ওয়ার্ড ছিলো। মহিলাদের জন্য বেড ছিলো ৪ টি পুরুষদের জন্য ৮ টি। এখানে ছিল শিফটিং ডিউটি। সকাল ৭ টা থেকে ২ টা, আবার ২ টা থেকে রাত ১০ টা এবং রাত ১০ টা থেকে সকাল ৭ টা পর্যন্ত। রোগী না থাকায় সকাল আর সন্ধ্যায় যাদের ডিউটি, তারাও আসেন না। আগে সপ্তাহে ১ দিন করে ডাক্তার আসতেন। তাদের সবাই চাকরি থেকে অবসরে গিয়েছেন। চিফ মেডিক্যাল অফিসার ডা.আব্দুল আহাদ জানান, ২০১৭ সাল থেকে রেলওয়ে হাসপাতালের জন্য ডাক্তার নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ। তাই চিকিৎসক সংকট। খণ্ডকালীন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়ার সুযোগও আমাদের নেই। মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি অনেকবার অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি। আশা করছি ৪ মাস থেকে ৫ মাসের মধ্যে ডাক্তার নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে। বাজেটে হাসপাতালের জন্য বরাদ্দও কম থাকে বলে জানান তিনি। |