বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
ভারতের মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা এক ব্যক্তির মাথাতেই দেখা গিয়েছে গণ্ডারের মতো শিং। ঠিক মাথার মাঝখানে। খুলি ফুঁড়ে গজিয়ে উঠেছে! সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, সাগর জেলার রাহলি গ্রামের বাসন্দি বৃদ্ধের নাম শ্যাম লাল যাদব। ২০১৪ সালে মাথায় আঘাত পান তিনি। এর পরই মাথার মাঝখান থেকে উদ্ভট কিছু বড় হতে শুরু করে। যা দেখতে ঠিক শিংয়ের মতো।
প্রথম দিকে জিনিসটা বাড়লেই নিজেই কেটে ফেলতেন বৃদ্ধ। ফের তা লম্বা হতে শুরু করলে চিকিৎসকদের কাছে যান শ্যামলাল। তবে এই ধরনের শিং গজানোর প্রকৃত কারণ অজানা। বিশেষজ্ঞদের কারও কারও কোনও ধরনের রেডিয়েশন থেকেও এমনটা ঘটতে পারে।
সম্প্রতি ‘ভিসানারি ভয়েড’ নামের একটি এক্স হ্যান্ডেল থেকে ‘পশুমানুষ’ শ্যামলালের ছবি পোস্ট করা হয়েছিল। সাধারণ এই অ্যাকাউন্ট থেকে রহস্যজনক ঘটনার বিষয়ে পোস্ট করা হয়ে থাকে। ওই পোস্টেই অবশ্য ‘শিং’ গজানোর রহস্য ভেদ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, চিকিৎসাবিদ্যার পরিভাষায় এই বিষয়টিকে বলা হয় ‘কিউটেনিয়াস হর্ন’ (ত্বকের শিং) বা ডেভিলস হর্ন (শয়তানের শিং) অথবা অ্যানিমালস হর্ন (পশুর শিং)। এটি একটি বিরল ধরণের ত্বকের বৃদ্ধি। দেখতে অনেকটা প্রাণীদের শিংয়ের মতোই। ত্বকের সমস্যা থেকেই যা হয়ে থাকে। এর ফল ক্যান্সারও হতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, এক বিশেষ ধরনের চর্মরোগের প্রভাবে মানুষের শরীরেও গরু, ছাগলের মতো শিং গজাতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়, এর নাম ‘কটেনিয়াস হর্ন’। চিকিৎসকদের মতে, এটি এক ধরনের স্কিন টিউমার। তবে এটি কেন হয় তার কোনো নির্দিষ্ট কারণ বিজ্ঞানীরা এখনও উদ্ধার করতে পারেননি।
তবে তাদের মতে, শরীরে নখ, চুল গঠনকারী প্রোটিন কেরাটিনের মাত্রাতিরিক্ত ক্ষরণের ফলে এই কটেনিয়াস হর্ন তৈরি হয়। সূর্যের অতিরিক্ত বিকিরণের ফলে এই রোগ হতে পারে। এ ছাড়া আঁচিলের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলেও হতে পারে এ রোগ।
মার্কিন গবেষকদের মতে, কটেনিয়াস হর্ন আসলে ক্যান্সারের পূর্ববর্তী ক্ষত। ত্বকের যে অংশে কটেনিয়াস হর্ন গজায়, সেই অংশে জ্বালা বা যন্ত্রণা হতে পারে। মারাত্মক পরিস্থিতিতে রক্তক্ষরণ পর্যন্ত হতে পারে।
এই রোগের এখনও তেমন কোনো চিকিৎসা আবিষ্কৃত হয়নি। শরীরের গজানো কটেনিয়াস হর্ন হলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চেঁচে ফেলা হয়, নয়তো ওষুধের মাধ্যমে পুড়িয়ে কটেনিয়াস হর্নের বৃদ্ধির গতি কমানো হয়।
কটেনিয়াস হর্ন শুধু কপালে বা মাথায় নয়; এটি কানে, ঘাড়ে, হাঁটু বা কনুইয়েও গজাতে পারে। আর স্বাভাবিকভাবে এটি ২-৩ ইঞ্চি লম্বা হয়। তবে ক্ষেত্রবিশেষে এটি ৩-৪ সেন্টিমিটার লম্বাও হতে পারে। তাই এ ধরনের কোনো লক্ষণ যদি শরীরে দেখা দেয়, তা হলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।