Home চেম্বার শিল্প-কারখানা চালু রাখার দাবি এফবিসিসিআই’র

শিল্প-কারখানা চালু রাখার দাবি এফবিসিসিআই’র

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে উৎপাদনশীল সব শিল্প-কারখানা সচল রাখার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের আওতায় সব ধরনের শিল্প-কারখানা বন্ধ রাখা হলে দেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। সম্পূর্ণভাবে বিঘ্নিত হবে সাপ্লাই চেইন (সরবরাহ ব্যবস্থা)। এতে উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যন্ত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

বিশেষ করে খাদ্যসামগ্রী, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্য, বোতলজাত পানীয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ইত্যাদি উৎপাদন বন্ধ থাকলে ভোক্তারা সমস্যার সম্মুখীন হবেন। পণ্য সঠিকভাবে সরবরাহ ও বাজারজাত না হলে মূল্য বৃদ্ধি পাবে। এতে স্বল্প আয়ের ক্রেতারা ভোগান্তিতে পড়তে পারেন। পাশাপাশি রপ্তানি খাতের উৎপাদন ব্যবস্থা বন্ধ থাকলে সময়মতো পরবর্তী রপ্তানি অর্ডার অনুযায়ী সাপ্লাই দেয়া সম্ভব হবে না। এতে রপ্তানি অর্ডার বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটিসহ প্রায় ১৮-২০ দিন কারখানা বন্ধ থাকলেও অনিশ্চয়তার মাঝে লেইট সামার, ক্রিসমাস ও বড়দিন এবং আগামী শীতের কার্যাদেশসমূহ হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এক মাসের রপ্তানি শিডিউল বিঘিœত হলে পরবর্তী ছয় মাসের রপ্তানি শিডিউলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

সেইসঙ্গে উৎপাদন বন্ধ থাকলে আমদানি করা কাঁচামাল অব্যবহৃত হয়ে নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে আমদানিকারক ও উৎপাদক উভয়ই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এছাড়া ক্ষুদ্র ও ছোট কারখানা বন্ধ রাখা হলে উদ্যোক্তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এবং কারখানা পুনরায় চালু রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে।’

এফবিসিসিআই সভাপতি জানান, ইতোমধ্যে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, প্লাস্টিক গুড্স ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ টেরি-টাওয়েল ম্যানু : অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ রপ্তানি ও উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন ও চেম্বারগুলো শিল্প-কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখার বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য এফবিসিসিআই-এর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।

জসিম উদ্দিন বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ রোধে জারি করা বিধিনিষেধ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে ওষুধ কারখানা বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। যদি ওষুধ কারাখানা বন্ধ রাখা হয় তবে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হবে। অপরদিকে ট্যানারি কারখানা বন্ধ রাখা হলে কোরবানির ঈদে সংগৃহীত চামড়া সংরক্ষণ কার্যক্রম ব্যাহত হবে। বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে জীবন রক্ষাকে অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে। কিন্তু উৎপাদন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হলে খাদ্যপণ্যসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য থেকে সবাই বঞ্চিত হবেন।’

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায় বিদ্যমান বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতির মধ্যেও দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল রয়েছে এবং জাতীয় প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ১ শতাংশ অর্জনে সক্ষম হয়েছে। যদি উৎপাদন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়, তাহলে অর্থনীতির চলমান গতিধারা ব্যাহত হবে। জীবন ও জীবিকার মধ্যে সমন্বয়ের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক কার্যক্রমকেও সচল রাখতে উৎপাদন ব্যবস্থাকে চলমান রাখা জরুরি।’

এমন প্রেক্ষাপটে শিল্প-কারখানাকে বিধি-নিষেধের আওতার বাইরে রেখে উৎপাদন প্রক্রিয়াকে চলমান রাখার জন্য সরকারের প্রতি এফবিসিসিআই-এর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন জোর দাবি জানান।