শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা:কোথাও কোথাও তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। হিমেল বাতাসে শীতের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে বেশি। প্রতিদিন নামছে তাপমাত্রার পারদ। গতকাল শুক্রবার চলতি শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে শ্রীমঙ্গলে ৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শৈত্যপ্রবাহ বাড়বে বলে জানালেন আবহাওয়াবিদরা। রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে প্রবাহিত চলমান শৈত্যপ্রবাহ ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। আজ শনিবার ও রবিবারও দেশের একাধিক জেলার তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান বলেন, রাজধানীসহ বড় শহরগুলোতে শীতের তীব্রতা কম হলেও গ্রামীণ জনপদে বিকাল থেকে জেঁকে বসা শীতের প্রকোপে কাহিল দশা। দেশের ১৬টি জেলা এবং রংপুর বিভাগে শৈত্যপ্রবাহের তীব্রতা বাড়ছে। দিনে রোদ আর রাতে হাড় কাঁপানো শীত চলছে গ্রামে। তিনি বলেন, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বেশির ভাগ বড় শহরে শৈত্যপ্রবাহ হ্রাস পেয়েছে। অতিরিক্ত ঘনবসতি, কংক্রিটের উঁচু ভবন আর শহরে জলাশয় ও সবুজ কম থাকায় শহরের তাপমাত্রা গ্রামের চেয়ে কয়েক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি থাকছে।
আবহাওয়াবিদ আব্দুল আলিম বলেন, শ্রীমঙ্গলে রেকর্ড করা ৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাই এ বছরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। গত বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল নওগাঁর বদলগাছিতে। শ্রীমঙ্গলের পর গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রার দ্বিতীয় স্থানে ছিল তেঁতুলিয়া, সেখানের তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ঈশ্বরদী।
বিশ্বের সর্বাপেক্ষা নির্ভরযোগ্য আমেরিকার ও ইউরোপিয়ান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুযায়ী ২০২২ সালের ৪ এবং ৫ ফেব্রুয়ারির মতো আগামী ২৯ ও ৩০ জানুয়ারি বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে। আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, শীতের এই প্রবণতা আরও তিন দিন থাকতে পারে। এর পর থেকে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়বে।
দেশের তিনটি এলাকাকে শীতের হটস্পট বলা হয়। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও চুয়াডাঙ্গা। এর বাইরে এবার নওগাঁর বদলগাছিতে তীব্র শীত পড়েছে। চলতি মাসে দুই দিন বদলগাছিতে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারও বদলগাছিতে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। তবে এর এক দিন পরই গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হলো শ্রীমঙ্গলে।
পৌষের পর মাঘেও চুয়াডাঙ্গায় কনকনে ঠান্ডা বিরাজ করছে। তাপমাত্রা ওঠা-নামা করলেও কমছে না শীত। টানা মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পর এবার শুরু হয়েছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। হিমেল বাতাসে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে।
শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় এ জেলায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বইছে শৈত্যপ্রবাহ। তবে সূর্যের দেখা মেলায় কিছুটা কমেছে কুয়াশার দাপট। কিন্তু কমেনি শীতের তীব্রতা। হিম শীতল বাতাসে শীতের তীব্রতা জানান দিচ্ছে কয়েকগুণ বেশি। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে না মানুষ।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান বলেন, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি। দিনের বেলায় সূর্যের দেখা মিললেও উত্তাপ মিলছে না। এতে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হচ্ছে। আরও কয়েকদিন এমন পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে। শুক্রবার এ জেলার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। এর আগে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত ছিল। এখন তাপমাত্রা কমে তা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। তাপমাত্রা আরও কমে গিয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিতে পারে।