*অসচেতনতার জন্য সামনে কঠিন সময় আসতে পারে: সিভিল সার্জন
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: ঈদ সামনে রেখে নগরীর বিপণিবিতান আর ফুটপাতে তুমুল বেচাকেনা চলছে। দিন যত এগোচ্ছে, ক্রেতার ভিড় ততই বাড়ছে। সামাজিক দূরত্ব না রেখে গাদাগাদি করে পছন্দের জিনিস কিনছেন সবাই।
চট্টগ্রামের সবচেয়ে বেশি বিপণিবিতান মূল শহরের জিইসি মোড় এলাকায়। তবে গেল কয়েক বছর ধরে নগরীর ইপিজেড এলাকা, আগ্রাবাদ রোড, কাঠঘর এলাকা, হালিশহর এলাকায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য ছোট-বড় শপিং মল। ঈদের আগ মুহূর্তে এই শপিং মলগুলোতে ক্রেতাদের ঢল নেমেছে।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার বলা হলেও ঈদের আমেজে কেনাকাটা করতে আসা মানুষ তা আমলেই নিচ্ছেন না। এতে করে করোনায় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
মঙ্গলবার (১১মে) বেলা ১১টা থেকে বিভিন্ন শপিং মল ঘুরে দেখা যায়, ছোট-বড় শপিং মলে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। মুরাদপুর থেকে আগ্রাবাদ এলাকা পর্যন্ত দুপাশের সড়ক দিয়ে গাদাগাদি করে ক্রেতারা হেঁটে বিভিন্ন শপিং মলে কেনাকাটা করছেন। তবে শপিং মলের চেয়েও বেশি ভিড় সড়কের দুই পাশের ফুটপাতে।
দেখা গেছে, অনেক ক্রেতা-বিক্রেতার মুখেই মাস্ক নেই। যে যার মতো থুতনিতে মাস্ক রেখে দামাদামি করে পছন্দের জিনিস কিনছেন। কোনো বিপণিবিতানের সামনে নেই হাত ধোয়ার পানি কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা। সবাই যেন করোনাকে ভুলে গিয়ে ঈদ আনন্দে মেতে উঠেছে।
আক্তারুজ্জামান সেন্টারের পুরোনো ব্যবসায়ী রমিজ বিজনেসটুডে২৪ কে বলেন, লকডাউনে মার্কেট বন্ধ থাকায় ভালো একটা ধাক্কা খেয়েছি। দোকান বন্ধ রেখে মালিককে ভাড়া দিয়েছি। তবে আশা করছি ঈদের আগেই সব ক্ষতি পুষিয়ে যাবে।
আগ্রাবাদের ফুটপাতে ছোটদের জামাকাপড় বিক্রি করেন তাসিন নামে এক যুবক। মুখের মাস্ক কোথায় জিগ্যেস করতেই বলেন, বেশিক্ষণ মুহে মাস্ক লাগাইলে কষ্ট লাগে। তাই খুলে রেখেছি ৷ পুলিশ আইলে লাগাই। মুখে মাস্ক দিয়ে ক্রেতাদের সাথে কথা বললে কথা বেশি বুঝা যায় না। তাই মাস্ক লাগাই আর খুলি। করোনারে পাত্তা দেই না দেখে করোনা ধরে না। ভয় পাইলেই ধরবে!
বালি আর্কিডে শপিং করতে আসা সানজিদা হোসেন নামে এক ক্রেতা বিজনেসটুডে২৪কে বলেন, অল্প কিছু কেনার ইচ্ছা নিয়ে মার্কেটে এসেছি। আমরা সচেতন থাকলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম। এভাবেই আমার মতো এক এক করে শপিং মল আর ফুটপাতে মানুষের ঢল নেমেছে। আমাদেরই ভুল। আমরা এই একটা ঈদে শপিং না করলে কিংবা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারলে করোনায় আক্রান্তের ঝুঁকিটা কমে যেত৷ তবে পরিবারের সদস্য দের জন্য মার্কেটে আসতে হলো। চাকরি জীবনের প্রথম ঈদ তাই সবাই কে কিছু না কিছু দিতে হচ্ছে।
জেলা সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, মানুষ যেভাবে শপিং মলে যাচ্ছেন, তাতে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। এই ঈদে নিজ থেকে সচেতন হয়ে সামাজিক দূরত্ব বজার রেখে কেনাকাটা করার দরকার ছিল। এভাবে অসচেতনতার জন্য সামনে কঠিন সময় আসতে পারে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বিজনেসটুডে২৪কে বলেন, বিক্রেতাদের বারবার বলা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিক্রি করার জন্য। মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য মাঠে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ কাজ করছে। এ ছাড়া রাস্তায় বের হওয়া যাদের মুখে মাস্ক নেই, তাদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাস্ক দেয়া হচ্ছে।