Home আন্তর্জাতিক ‘সহস্র বছরের’ রেকর্ড বৃষ্টি চীনে

‘সহস্র বছরের’ রেকর্ড বৃষ্টি চীনে

ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

চীনের হেনান প্রদেশে প্রবল বৃষ্টিপাতে রাজধানী ঝাংঝৌসহ বিস্তৃত এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে, মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১২ জনের এবং প্রায় এক লাখ লোককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যা থেকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ৬১৭ দশমিক এক মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে যাকে আবহাওয়াবিদরা এক হাজার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত বলে অভিহিত করেছেন, স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এ পরিমাণ বৃষ্টি ওই অঞ্চলের বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ৬৪০ দশমিক আট মিলিমিটারের প্রায় সমান।

এতে বুধবার প্রদেশটির বিশাল এলাকা তলিয়ে যায়। হুয়াং হি নদীর তীরবর্তী এক কোটি ২০ লাখ বাসিন্দার শহর ঝাংজৌতে সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। সেখান থেকে এ পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে ও প্রায় এক লাখ বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হয়েছে বলে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা সিনহুয়া স্থানীয় সরকারকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে।

এবার চীনের মধ্যাঞ্চলে অস্বাভাবিকরকম সক্রিয় বর্ষকাল দেখা যাচ্ছে। এতে হুয়াং হি নদীর অববাহিকার অনেকগুলো নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। শনিবার থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে হেনান প্রদেশের লাখ লাখ মানুষের জীবন ওলটপালট হয়ে গেছে।

প্রদেশটির বহু শহরের রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে। বহু জলাধার ও বাঁধের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার পর্যায়ে চলে এসেছে।

বৃষ্টিতে এক রাতের মধ্যে ঝাংঝৌয়ের পশ্চিমে লুওইয়াং শহরের ইহিথান বাঁধে পানি বিপৎসীমার ২০ মিটার উপরে চলে এসেছে এবং বাঁধটি ‘যে কোনো সময় ধসে পড়তে পারে’ বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

ঝাংঝৌয়ের বন্যা নিয়ন্ত্রণ সদরদপ্তর জানিয়েছে, নগরীর গৌজাজুই জলাধারের পানি উপচে পড়েছে।

বুধবার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে পরিস্থিতি নিয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, “কিছু নদীর পানি পর্যবেক্ষণ সীমা অতিক্রম করেছে, কিছু বাঁধ ভেঙে গেছে, এতে বহু হতাহত ও সম্পদহানি হয়েছে। পাশাপাশি কিছু রেলওয়ে পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে এবং ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।”

বন্যা প্রতিরোধের চেষ্টা ‘অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

তিন দিন ধরে ঝাংঝৌতে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে তা ‘হাজার বছরে একবার’ দেখা যায়, আবহাওয়াবিদরা এমন কথা বলেছেন বলে তাদের উদ্ধৃত করে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।

মঙ্গলবার থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, পাতাল রেলের ভেতরে যাত্রীরা বুক সমান পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন আর ভূগর্ভস্থ স্টেশনগুলো উথালপাথাল পুকুরে পরিণত হয়েছে।

বুধবার ঝাংঝৌয়ের পরিবহন ব্যবস্থা অচল হয়ে ছিল, ব্যাপক জলবদ্ধতার মধ্যে স্কুল ও হাসপাতালগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার থেকে কয়েকটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে কিছু শিশু আটকা পড়ে আছে। প্রদেশটিতে আগামী তিন দিন পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে বলে বুধবার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।