বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা : সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিমকে রবিবার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
এ কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। আরও জানান, রবিবার সাড়ে ১০টায় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। লাশ দাফন করা হবে বনানী কবরস্থানে। করোনাভাইরাসের কারণে জনগণের স্বাস্থ্যবিধি ও স্বাস্থ্য সচেতনতার দিকটি বিবেচনায় রেখে নিজ এলাকা সিরাজগঞ্জে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না।
আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর শ্যামলী বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মোহাম্মদ নাসিম। তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন ছেলেসহ আসংখ্যা নেতা-কর্মী, আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
১ জুন রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম। পরে রাতে তার করোনাভাইরাস পজেটিভ আসে।
করোনাভাইরাস আক্রান্ত অবস্থায় মোহাম্মদ নাসিম ৫ জুন ভোরে স্ট্রোক করেন। জরুরিভাবে তার অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর চিকিৎসকরা তাকে প্রথমে ৭২ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখেন। পরে পর্যবেক্ষণের সময় আরও ৭২ ঘন্টা বৃদ্ধি করা হয়। অবশ্য তার করোনা টেস্ট দুইবারই নেগেটিভ আসে।
৬ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তার চিকিৎসায় একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়।
১৯৪৮ সালের ২ এপ্রিল সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মোহাম্মদ নাসিম। তার পিতা শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। যিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে গঠিত বাংলাদেশ সরকারে অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এবং স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধু সরকারের মন্ত্রীসভায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
মোহাম্মদ নাসিমের মায়ের নাম মোসাম্মৎ আমিনা খাতুন, যিনি আমেনা মনসুর হিসেবেই পরিচিত। তিনি একজন গৃহিণী ছিলেন।
মোহাম্মদ নাসিম জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৮৬, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালেও সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন মোহাম্মদ নাসিম। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে তিনি সিরাজগঞ্জ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন এবং ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এছাড়াও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সিরাজগঞ্জ-১ আসন থেকে বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
এর আগে ১৯৯৬ সালের সরকারে তিনি স্বরাষ্ট্র, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।
