বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: আন্দরকিল্লায় সিটি কর্পোশেনের আধুনিক নগর ভবন নির্মাণ কাজের এক দশক পার হলেও কোনো গতি নেই। নানা জটিলতায় আটকে আছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা বাজেটের এই প্রকল্প।
বর্তমানে সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম চলছে টাইগারপাসে একটি ভবনে।
৫৩ দশমিক ৩৮ কাঠার উপর ২৫ তলা বিশিষ্ট প্রস্তাবিত এই ভবনের তৃতীয় তলা পার্কিং, চতুর্থ ও পঞ্চম তলা শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দেয়া এবং বাকী তলাগুলোতে সিটি কর্পোরেশনের অফিস রাখার পরিকল্পনা ছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রয়াত মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী নতুন নগর ভবন করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। পরবর্তী মেয়র মঞ্জুরুল আলম দায়িত্ব গ্রহণের পর পরিকল্পনা অনুযায়ী আধুনিক নগর ভবন স্থাপনের লক্ষ্যে প্রথম ধাপে পাইলিংয়ের কাজ শুরু করেন। কিন্তু তা আর আগায়নি। ২০১৫ সালে আ জ ম নাছির উদ্দীন মেয়র নির্বাচিত হলে পুনরায় ১০০কোটি টাকা ব্যায়ে নগর ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেন। কিন্তু নানা জটিলতায় সাবেক মেয়র নাছিরও সফল হননি।
সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, সরকার আধুনিক নগর ভবন তৈরি করার লক্ষ্যে ১০০কোটি টাকার বাজেট বাড়িয়ে প্রায় ২২৫ কোটি টাকা করেছেন এবং তা প্রি-একনেক সভায় অনুমোদিত হয়।
প্রকল্পের ডিপিপি থেকে জানা যায়, ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫৪ বর্গফুটের ২৩ তলা সিটি ভবনের ২ বেইজমেন্ট ও ফাউন্ডেশনসহ ২৩ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ ও আনুষঙ্গিক কাজে ব্যয় হবে ১১৮ কোটি ৮৪ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। ফার্নিচার সরবরাহসহ ইন্টেরিয়র কাজে ব্যয় ২৫ কোটি, ৬টি লিফট সরবরাহ ও স্থাপনে ৬ কোটি টাকা, ২০০টি এয়ারকুলার সরবরাহ ও স্থাপনে ২ কোটি টাকা, ১টি সাব স্টেশন, জেনারেটর এবং সোলার প্যানেল সরবরাহ ও স্থাপনে ৪ কোটি টাকা, ২টি অফিস বাস ২ কোটি টাকা, ৩টি এরিয়াল লিফট ৬ কোটি টাকা, ৩টি ওয়াটার ভাউজার ৬ কোটি টাকা, ১৪টি ডবল কেবিন পিক আপ ৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা, ৮টি জিপ ৫ কোটি ৬ লাখ টাকা এবং ১টি জীপ (পাজেরো) ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় হবে।
প্রকল্পের ডিপিপিতে বলা হয়েছে, ‘প্রকল্পের সামগ্রিক উদ্দেশ্য হচ্ছে নাগরিক সুবিধাদি নিশ্চিত করা এবং নাগরিক সেবা প্রদানের মাধ্যমে জনগণের জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করা। নগরবাসীর আকাঙ্খা অনুযায়ী সেবা প্রদানের লক্ষ্যে সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা।
সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লেঃ কর্ণেল সোহেল আহমেদ বিজনেসটুডে২৪ কে বলেন, আধুনিক নগর ভবন তৈরির লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সিটি কর্পোরেশন। যেহেতু নগর ভবন নির্মান একটি বড় প্রকল্প এবং সময় সাপেক্ষ। তাই সরকার করোনাকালীন সময়ে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। আশাকরি মহামারি শেষ হলে, নগর ভবনের কাজ দৃশ্যমান হবে।
এ বিষয়ে সাবেক মেয়র মঞ্জুরুল আলম বলেছেন, নানা বাধ্যবাধকতার মধ্যেও আমি নতুন নগর ভবনের পাইলিং এর কাজ সম্পন্ন করি। কিন্তু কষ্টের ব্যাপার হচ্ছে, পাইলিং এর কাজ শেষ হতেই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন চলে আসে। পরবর্তী মেয়র কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নিলেও এখনো পর্যন্ত আগের অবস্থানে আছে।
তিনি আরো বলেন, নগর ভবন নগরবাসির জন্য খুব দরকার। তাছাড়া আধুনিক নগর ভবন তৈরি হলে নগর উন্নয়নের কাজে আরো অনেক বেশি গতিশীলতা আসবে।
সিটি প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, সাবেক মেয়রগন এ বিল্ডিংয়ের কাজের উদ্ভোধন করেছেন। পরিকল্পনাও ভালো। জটিলতা আছে কিছু, আশাকরি কাজ শুরু হবে।