Home First Lead এবার বাংলাদেশ পাল্টা বুড়ো আঙ্গুল দেখাল ভারতকে

এবার বাংলাদেশ পাল্টা বুড়ো আঙ্গুল দেখাল ভারতকে

ভারত থেকে সড়কপথে সুতো আমদানি বন্ধ

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: ভারতের মোদী সরকার অতি সম্প্রতি বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশকে দেয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা। এতে বন্ধ হয়ে গেছে ভারতের স্থলবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি। এবার বাংলাদেশ পাল্টা বুড়ো আঙ্গুল দেখাল ভারতকে। বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে সুতা আমদানির সুবিধা বাতিল করে দেয়া হয়েছে। দেশীয় টেক্সটাইল মিল সুরক্ষায় নেয়া এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে অবিলম্বে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ( এনবিআর ) এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মঙ্গলবার । ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট জারি করা প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে নতুন এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

২০২৪ সালে বৈধ পথে ভারত থেকে ২৭০ কোটি ডলারের সুতা আমদানি হয়েছে। অবৈধ পথে কী পরিমাণ আমদানি হয়েছে, তার কোন ধারণা নেই । কারণ বন্দরে কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। ভারত থেকে সুতা আনায় সে দেশে দেড় লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হলো, মূল্য সংযোজনটা সে দেশে হলো, আর বাংলাদেশের শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলো। ভারতে অভ্যন্তরীণ বাজারে ব্যবহারের সুতার চেয়ে রপ্তানির সুতার দাম কম। রপ্তানিকে প্রাধান্য দিতে তাদের এই ব্যবস্থা।

জানুয়ারিতে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) স্থলপথে ভারতীয় সুতা আমদানি বন্ধের দাবি জানিয়ে সরকারকে দেয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিগত সরকার নীতি পরিবর্তনের মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির অনুমতি দেয়। কিন্তু, এসব স্থলবন্দরে সুতার মান যাচাই করে শুল্কায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো বা কারিগরি সক্ষমতা নেই। এছাড়া শুধু আংশিক আমদানির অনুমোদন দেওয়া হলেও এর ব্যাপক অপব্যবহার হচ্ছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্থানীয় সুতাকলগুলো। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, স্থলবন্দর ব্যবহার করে সুতা আমদানি বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে দেশের টেক্সটাইল শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
রাজধানীর গুলশান ক্লাবে সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে দেশীয় টেক্সটাইল শিল্পের সংকটাবস্থা এবং নানাবিধ সমস্যা তুলে ধরে জানানো হয় যে দেশের টেক্সটাইল সেক্টর দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এর মধ্যে গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, ডলার সংকট, ব্যাংক সুদের হার ১৮ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের শর্তাবলি পূরণের অজুহাতে রপ্তানির বিপরীতে নগদ প্রণোদনার অস্বাভাবিক হ্রাস এবং টাকার অবমূল্যায়নের কারণে ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের সংকট ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
এর পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান এ–সংক্রান্ত আদেশ জারি করেন। তবে স্থলপথ ছাড়া সমুদ্রপথে বা অন্য কোনো পথে সুতা আমদানি করা যাবে।
 ভারত বাংলাদেশকে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা দেওয়ায় ইতি টানে সম্প্রতি। অর্থাৎ, ভারতীয় শুল্কবন্দর ব্যবহার করে আর কোন তৃতীয় দেশে পণ্য পরিবহন করতে পারবে না দেশ। ভারত সরকারের দাবি ছিল, ভারতের রপ্তানিকারক সংস্থাগুলি দিনকে দিন সমস্যায় পড়ছিল। আর এই কারণে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর ভারতের এই সিদ্ধান্তের পরেই বাংলাদেশ ভারতকে পাল্টা বুড়ো আঙুল দেখাল।