স্টেশন ভবন গোয়াল ঘরে পরিণত, রেলসম্পদ লুটপাট
হবিগঞ্জ -৪ আসনের সাংসদ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এড মাহবুব আলী বলেন, অনেক স্টেশন বন্ধ ছিল, আমি সংসদে আলোচনা করে অধিকাংশ চালু করছি। বাকিগুলো চালুর ব্যাপারে রেলপথ মন্ত্রী সহ সংসদে আলোচনা করে সংস্কার ও চালু করার সুপারিশ করব।
মাসুদ লস্কর, হবিগঞ্জ থেকে: মাধবপুর উপজেলার আখাউড়া -কুলাউড়া-সিলেট রোডে অবস্থিত ছাতিয়াইন রেলওয়ে স্টেশন। বাংলাদেশ রেলওয়ে পরিচালিত স্টেশন এটি। এ পথে, পাহাড়িকা,পারাবত, উদয়ন, জয়ন্তিকা, উপবন, কালনী, সুরমা,জালালাবাদ, কুশিয়ারা ট্রেন চলাচল করে।
আখাউড়া -সিলেট রেল সেকশনের মাধবপুর উপজেলার ছাতিয়াইন রেলওয়ে স্টেশন এর এখন করুন দশা। রেলের মূল্যবান যন্ত্রপাতি লুটপাট হচ্ছে। তালাবদ্ধ স্টেশন চালুর কোনো ্উদ্যোগ নেই। কিছু লোকাল ট্রেন যাত্রা বিরতি করলেও যাত্রী বাধ্য হয়ে বিনা টিকেটে ট্রেন ভ্রমণ করেন।
স্টেশন টি সংস্কার করে চালু করলে সরকারের রাজস্ব প্রাপ্তিসহ এলাকাবাসীর ট্রেন চলাচলে সুবিধা হতো। এছাড়া স্টেশন বন্ধ ও পরিত্যক্ত হয়ে পড়ায় তা নানা অসামাজিক ও অপরাধীদের নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হয়েছে।
স্টেশনের দোকানদার নিরঞ্জন কর্মকার জানান, ১৫/২০ টি গ্রাম থেকে আখাউড়া – সিলেট রোডে প্রতিদিন প্রায় ২/৩ শ যাত্রী উঠানামা করে এখানে। কিন্তু স্টেশন তালাবদ্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে যাত্রী টিটিদের সাথে আঁতাত করে বিনাটিকেটে ভ্রমণ করে। স্টেশন চালু হলে পার্শ্ববর্তী সুরমা, তেলিয়াপাড়া, নোয়াপাড়া, ইটাখোলা চা বাগান থেকে পাতা সহজেই চট্টগ্রা কাস্টমস বন্ডেড ওয়ার হাউজে পাঠানো যেত।
বিগত এক যুগ থেকে স্টেশন বন্ধ থাকায় স্টেশনের অনেক সরকারি সম্পদ ইতিমধ্যে চুরি হয়ে গেছে। বেদখল হয়ে গেছে স্টেশন মাস্টারের কক্ষ।
সরজমিনে দেখা যায়, শারাজ মিয়া নামের এক লোক ছাতিয়াইন রেলওয়ে স্টেশন এর অফিস রুমে গরু পালন করছেন। জানতে চাইলে শারাজ মিয়া বলেন, পরিত্যক্ত তাই ব্যবহার করছি। সরকার চাইলে খালি করে দেব।
শরীফ নামের এক স্হায়ী বাসিন্দা বলেন, পরিত্যক্ত থাকায় মাদকসেবিরা সাইনবোর্ড পর্যন্ত খুলে নিয়ে গেছে।
ছাতিয়াইন ইউ পি এর চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, মাধবপুরে প্রায় ১০০ টির বেশি নামি-দামি শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে। তাছাড়া অলিপুর গেইট এলাকায় মিনি ইপিজেড গড়ে উঠায় রেলপথে পণ্য চালান সহ যাত্রীদের ভ্রমণ চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া সড়ক পথে দুর্ঘটনা বেশি হওয়ায় রেলপথকে মানুষ নিরাপদ ও আরামদায়ক মনে করে। একারণে স্টেশনটি সংস্কার করে চালু করলে এলাকার মানুষের সুবিধার পাশাপাশি শিল্প কারখানায় উৎপাদিত পণ্য পাঠানোর সুবিধা হতো্ আর তাতে সরকারের রাজস্ব আয় হতো।
হবিগঞ্জ -৪ আসনের সাংসদ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এড মাহবুব আলী বলেন, অনেক স্টেশন বন্ধ ছিল, আমি সংসদে আলোচনা করে অধিকাংশ চালু করছি। বাকিগুলো চালুর ব্যাপারে রেলপথ মন্ত্রী সহ সংসদে আলোচনা করে সংস্কার ও চালু করার সুপারিশ করব। আশাকরি সরকার এ ব্যাপারে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নিবে।
১৮৯২ সালে ইংল্যান্ডে গঠিত আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানি রেলপথ নির্মাণের দায়িত্ব নেয়।
১৯৮৫ সালে ১ জুলাই চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা ১৫০ কিলোমিটার মিটারগেজ লাইন এবং ১৮৯৬ সালে কুমিল্লা -আখাউড়া – শায়েস্তা গঞ্জ রেললাইনের স্টেশন হিসাবে ছাতিয়াইন রেলওয়ে স্টেশন প্রতিষ্ঠা ও চালু হয়।