Home Second Lead মোটরসাইকেল আরোহীর কোমরে ১০ কোটি টাকার স্বর্ণ

মোটরসাইকেল আরোহীর কোমরে ১০ কোটি টাকার স্বর্ণ

ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুৃডে২৪ প্রতিনিধি

যশোর: বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) যশোরে বিশেষ অভিযান চালিয়ে চৌগাছা উপজেলার বড় কাবিলপুর শ্মশানঘাট এলাকায় এক মোটরসাইকেল আরোহীকে সাড়ে ১৪ কেজি স্বর্ণসহ আটক করেছে। আটক স্বর্ণের সিজার মূল্য ১০ কোটি টাকার বেশি।

বিজিবি জানায়, আটক ব্যক্তির নাম মো. শাহ আলম (৩৫)। তিনি  চৌগাছার কাবিলপুর গ্রামের আবদুর রহিমের ছেলে। তার কাছে ১২৪টি স্বর্ণের বার পাওয়া গেছে। এগুলোর ওজন ১৪.৪৫০ কেজি। বারগুলো কোমরের পেছনে বিশেষ কায়দায় লুকানো ছিল। স্বর্ণের বার নিয়ে তিনি ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে সীমান্তের দিকে যাওয়ার সময় বিজিবি’র কাছে ধরা পড়েন।

অভিযানটি পরিচালনা করেছে বিজিবি’র যশোর ব্যাটালিয়নের শাহজাদপুর বিওপি’র টহল দল।

যশোর ব্যাটালিয়ন (৪৯ বিজিবি) এর অধিনায়ক, লে: কর্নেল শাহেদ মিনহাজ ছিদ্দিকী জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটায় শাহজাদপুুর বিওপি’র টহলদল একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। ওই অভিযানে মেইন পিলার ৩৮/৪-আর থেকে আনুমানিক ৫০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যশোরের চৌগাছা উপজেলার বড় কাবিলপুর শ্মশানঘাট এলাকায় রাস্তার উপর কৃষকের বেশে সন্দেহভাজন একজন মোটরসাইকেল আরোহীকে আটক করা হয়। পরে তার দেহ তল্লাশী করে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে আনা কোমরের পিছনে বিশেষ কায়দায় লুকানো  স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। জব্দকৃত স্বর্ণের আনুমানিক সিজার মূল্য ১০ কোটি ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা

দীর্ঘদিন ধরে যশোরের বিভিন্ন সীমান্ত ভারতে সোনা পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। ২০২০ সালে বিজিবি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ৪১ কেজি ৭শ’ ২২ গ্রাম সোনা জব্দ করে। যার মূল্য ২৭ কোটি ৯৩ লাখ ৮২ হাজার ৩শ’৪০ টাকা। ২০২১ সালে উদ্ধার হয় ১৩ কেজি ১শ’৪৩ গ্রাম সোনা। যার মূল্য ৯ কোটি ৫ লাখ ছয় হাজার টাকা এবং ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত উদ্ধার হয় ১ কেজি ১শ’ ৬৫ গ্রাম সোনা। যার মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা। সর্বশেষ শুক্রবার আরও ১৪ কেজি ৪শ’৫০ গ্রাম সোনা উদ্ধার হলো।
সীমান্তে সোনা পাচারে শার্শা উপজেলার অন্তত ২৫টি সিন্ডিকেট জড়িত। সীমান্তের সূত্রগুলো বলছে, প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ সোনা যশোরের বিভিন্ন ঘাট দিয়ে ভারতে পাচার হয়। এসব সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রতিদিন পাচার হয় সোনা। এছাড়াও সাদীপুর, দৌলতপুর ও বড়আঁচড়া রেললাইন দিয়ে বিপুল পরিমাণ সোনা পাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
পাচার হওয়া সোনার খুব কমই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে। তবে যখন ধরা পড়ে তখন কেজি কেজি ধরা পড়ে।
সূত্র জানিয়েছে, শার্শা, বেনাপোল ও চৌগাছার সবগুলো সীমান্ত দিয়ে যত সোনা যায়, পুটখালী সীমান্ত দিয়ে তার চেয়ে অনেক বেশি সোনা ভারতে পাচার করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে আবার কখনো কখনো তাদের ম্যানেজ করে চলে সোনা পাচারের রমরমা ব্যবসা। ঢাকা থেকে অন্তত চার দফা হাতবদল হয়ে সোনার বারগুলো পাচার করা হয় ভারতে।
সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে ট্রেন অথবা বাসে করে একটি চক্র সোনার বার বিভিন্নভাবে নিয়ে আসে যশোরের বিভিন্ন পয়েন্টে। পরিবহন কাউন্টার অথবা তাদের নির্ধারিত স্থানে সোনার চালানটি হাতবদল হয়ে চলে যায় স্থানীয় এজেন্টের হাতে। এরপর স্থানীয় এজেন্টরা সেই সোনার চালান নিয়ে যায় পুটখালী, গাতিপাড়া, বড়আঁচড়া, রঘুনাথপুর, সাদীপুর, শিকারপুর, দৌলতপুর, ঘিবা সীমান্তের নির্ধারিত বাড়িতে। সেখান থেকে সীমান্ত পার হয়ে ভারতের সবচেয়ে বড় ডিলার অপু, বস গৌতম, ছোট গৌতম, পিন্টু, বরুণ, ডাকুসহ বিভিন্ন সিন্ডিকেটের হাতে সোনার চালান পৌঁছে দেয়া হয়।