স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে আট হাজার পিস কিট এসেছে, প্যাকেট খুলে মেয়াদোত্তীর্ণ পেয়েছি: সিভিল সার্জন
মোঃ আব্দুস সাওার, দিনাজপুর থেকে:দিনাজপুরে করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিটের পর্যাপ্ত মজুত নেই। স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে যেসব কিট এসেছে সেগুলোর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বন্ধ হয়ে যেতে পারে নমুনা পরীক্ষা।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার ২৪ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জেলায় পাঁচ হাজার পিস কিট পাঠানো হয়। সেগুলো নামিয়ে দেখা যায়, ২০২১ সালের জুলাই মাসে সেগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। গত সপ্তাহে পাঠানো তিন হাজার কিটেরও মেয়াদ ছিল না। সেগুলোর মেয়াদ শেষ হয় ২০২১ সালের অক্টোবর মাসেই। এ অবস্থায় নমুনা পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যেতে পারে এ জেলায়।
এদিকে, মঙ্গলবার দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা বুথে মেয়াদউত্তীর্ণ কিট পাওয়া গেছে। ওই কিট দিয়ে একজনের পরীক্ষার প্রস্তুতিও চলছিল। বিষয়টি জানাজানি হলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে মেডিকেল কর্তৃপক্ষ।
মেয়াদউত্তীর্ণ কিটের বিষয়টি নিশ্চিত করে দিনাজপুর সিভিল সার্জন ডা. এ এইচ এম বোরহান উল সিদ্দিকী জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে আট হাজার পিস কিট এসেছে, যেগুলোর প্যাকেট খুলে আমরা মেয়াদউত্তীর্ণ পেয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’
কিটের প্যাকেটের ওপরে মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ ছিল জুলাই পর্যন্ত। তবে ভেতরে থাকা সোয়াব স্টিকের মেয়াদ লেখা ছিল না। ভেতরে থাকা কোনোটির মেয়াদ রয়েছে ২০২৪ সাল পর্যন্ত, কিন্তু সবগুলোর নয়। এখন এসব কিট দিয়ে নমুনা পরীক্ষা হবে কি-না তা জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি। যদি এগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হয় বা ফেরত পাঠানো হয়, তাহলে এই মুহূর্তে দিনাজপুরে করোনা পরীক্ষার জন্য কিটের মজুত নেই। ফলে করোনা পরীক্ষা বন্ধ রাখতে হবে।
দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা সংশ্লিষ্ট দায়িত্বরত প্যাথলজি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. আরাফাত হোসেন জানান, গত সপ্তাহে তিন হাজার পিস করোনার কিট সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে পাঠানো হয়েছিল। পরে দেখা যায়, সেগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ। সেগুলো ফেরত পাঠানো হয়েছে। হয়তো ভুলবশত ওই কিটটি অন্যগুলোর সঙ্গে মিশে গিয়েছিল। আর কোনও মেয়াদোত্তীর্ণ কিট রয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ ২৫ জানুয়ারী মঙ্গলবার দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষার জন্য একটি মেয়াদোত্তীর্ণ কিট দেখতে পান এফবিএবির প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী শাহিনুর ইসলাম। বিষয়টি তিনি দায়িত্বরতদের জানালে তারা অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে ওই ব্যক্তি বিষয়টি হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মাসুদ রানাকে জানান। মাসুদ রানা হাসপাতালের করোনা সংশ্লিষ্ট দায়িত্বরত প্যাথলজি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. আরাফাত হোসেনকে জানালে তিনি ওই কিটের প্যাকেট সংগ্রহ করেন। তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন আর কোনও মেয়াদোত্তীর্ণ কিট আছে কি-না তা পর্যবেক্ষণ করেন।