Home সারাদেশ হবিগঞ্জ পৌরসভার ১১৭ কোটি টাকার বাজেট

হবিগঞ্জ পৌরসভার ১১৭ কোটি টাকার বাজেট

সংবাদ কম্মেলনে মেয়র আতাউর রহমান সেলিম।

৫৩টি লোকদেখানো প্রকল্পের কার্যাদেশ এখন বিষফোঁড়া: মেয়র


হবিগঞ্জ থেকে শেখ মোহাম্মদ তানভীর হোসেন: নতুন কোন করআরোপ ছাড়াই ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ১শ ১৭ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিম।

মঙ্গলবার হবিগঞ্জ পৌরভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ বাজেট ঘোষণা করেন। নতুন বাজেটে মোট আয় দেখানো হয়েছে ১শ ১৭ কোটি ৩৫ লক্ষ ৬৪ হাজার ৭৭১ টাকা। মোট ব্যয় দেখানো হয়েছে ১শ ১৬ কোটি ৮০ লক্ষ ২৮ হাজার ৭শ ৬২ টাকা। উদ্বৃত্ত দেখানো হয়েছে ৫৫ লক্ষ ৩৬ হাজার ৯ টাকা।
এবারের বাজেটে ইউজিআইআইপি-৩ এর আওতায় উল্লেখযোগ্য যে ব্যয়গুলো দেখানো হয়েছে সেগুলো হলো, ডাম্পিং স্পটের জমি অধিগ্রহন, কিবরিয়া অডিটরিয়াম সংস্কার, ওয়াটার ট্রিটম্যান্ট প্ল্যান্ট চালু, পৌর শপিং মল নির্মাণ (পানি উন্নয়ন বোর্ডের সামনে), চৌধুরী বাজার কাচামাল হাটা ও সিনেমা হল বাজার ও গরুর বাজার উন্নয়ন, পৌর কিচেন মার্কেট উর্ধমূখী সম্প্রসারণ, পুরাতন পৌরসভার জমিতে মাল্টিপারপাস বিল্ডিং নির্মাণ, এম্বুলেন্স ক্রয়, পৌর শিশুপার্ক নির্মাণ ও ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ।

লিখিত বক্তব্যে মেয়র আতাউর রহমান সেলিম বলেন, ‘ আমি যখন হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদে দায়িত্ব গ্রহন করি তখন পৌরসভার তহবিলে স্থিতি ছিল মাত্র ৪০ লক্ষ ৮৪ হাজার ৭শ ১২ টাকা। আর পৌরসভার দেনা ছিল ৪ কোটি ১৯ লক্ষ ৮০ হাজার ৪শ ৯২ টাকা। ৪০ লক্ষ টাকার বিপরীতে ৪ কোটি টাকার দেনা নিয়ে দায়িত্ব গ্রহন করা কত চ্যালেঞ্জিং সেটি নিশ্চয়ই আপনারা অনুমান করতে পারছেন। তার উপর দায়িত্ব গ্রহনের ৮ দিন পর ৫ এপ্রিল করোনা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার কারণে সরকারীভাবে ঘোষণা হলো সর্বাত্মক লকডাউন।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি দায়িত্ব গ্রহন করার পূর্বে পৌরসভার কি অবস্থা ছিল তার সামান্য উল্লেখ না করলেই নয়। যেখানে পৌরসভার অন্যতম বড় আয়ের উৎস গরুর বাজার ইজারা হতো প্রায় ৯১ লক্ষ টাকা, সেখানে আমি দায়িত্ব নেয়ার পূর্বে নানা অজুহাতে ওই বাজার প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা কমে ইজারা দেয়া হয় যা সত্যিই দুঃখজনক। এছাড়াও লোকদেখানোর জন্য পৌরসভার নিজস্ব তহবিল প্রায় শূন্য রেখেই আড়াই কোটি টাকার ৫৩ টি উন্নয়ন প্রকল্প কাজের কার্যাদেশ দেয়া হয় যা পৌরসভার জন্য এখন বিষফোঁড়া হয়ে দাড়িয়েছে।

হবিগঞ্জ পৌরসভার মাটিয়া দই বিল ১৪২৪ বাংলা সনে ইজারা হয়েছিল প্রায় ২৫ লক্ষ টাকায়। এখন সেই টাকার পরিমান আরো বাড়ার কথা ছিল। কিন্তু আমি দায়িত্ব পাওয়ার পূর্বেই পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারনে সেই বিল ১৪২৭ বাংলা সনে মাত্র ১২ লক্ষ টাকায় ইজারা দেয়া হয়। হবিগঞ্জ শহরের পোষ্ট অফিস রোডে রয়েছে পৌরমার্কেট। যে পৌরমার্কেট হবিগঞ্জ পৌরসভার জন্য একটি অন্যতম আয়ের উৎস হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পূর্ববর্তী পৌর কর্তৃপক্ষের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও উদাসীনতার কারনে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় হতে বঞ্চিত হচ্ছে পৌরসভা। আমার দায়িত্ব গ্রহনের আগে উন্নয়নের ঢাকঢোল পেটালেও মূলতঃ উন্নয়ন কাজ ছিল প্রায় বন্ধ।’ মেয়র বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি সমালোচনার চেয়ে বড়- সমস্যার সমাধান করা। আর তাই আমি দায়িত্ব গ্রহন করার পর পরই শহরের বাইপাসের পার্শ্বে অবস্থিত ৭ কোটি টাকার মাষ্টার ড্রেন, যার নির্মাণ বন্ধ ছিল তা’ চালু করেছি। এই মাষ্টার ড্রেন দিয়ে শহরের ৫ টি ওয়ার্ডের পানি নিস্কাশিত হয়। এ ড্রেন নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন হলে জলাবদ্ধতা নিরসনে আরো একধাপ এগিয়ে যাবে হবিগঞ্জ পৌরসভা। শুধু তাই নয় আমি দায়িত্ব গ্রহন করার পর সর্বাত্মক লক ডাউনের মাঝেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সকল উন্নয়নকাজ চালু রেখেছি।