Home বিনোদন চীনে ভোক্তা-পণ্য মেলায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রদর্শনী

চীনে ভোক্তা-পণ্য মেলায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রদর্শনী

হাইনান ভোক্তা-পণ্যমেলা

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক:

হাজার বছরের পুরনো লি উপজাতির পোশাক পরা হিউম্যানয়েড রোবটের সাথে হাত মেলানো, ‘এক্সোস্কেলেটন’ স্মার্ট ডিভাইস পরে ৩০ কেজি ওজন সহজেই উত্তোলন, বা স্মার্ট ম্যাসেজ চেয়ারে শুয়ে ‘গভীর ঘুম’-এর অভিজ্ঞতা নেওয়া—এ সবই দেখা গেলো চীনের হাইনানে পঞ্চম আন্তর্জাতিক ভোক্তা-পণ্য মেলায়। এবারের মেলায় প্রথমবারের মতো ৩০ শতাংশের বেশি জায়গা জুড়ে ছিল ভোক্তা-প্রযুক্তি প্রদর্শনী, যা দর্শকদের জন্য হয়ে উঠেছে আকর্ষণের কেন্দ্র। এখানে মানুষ সরাসরি অনুভব করতে পেরেছে কীভাবে প্রযুক্তি বাস্তব জীবনকে বদলে দিচ্ছে।

রোবটিক সহায়ক: মানুষের জীবন সহজ করছে

ওজন তোলা, উঁচু স্থানে কাজ করা বা রোগীর সেবা করা—এ সব কাজে এখন সহায়তা করছে ‘ওশা ইন্টেলিজেন্ট’-এর এক্সোস্কেলেটন রোবট। প্রদর্শনীতে সাংবাদিকরা সরাসরি এই রোবট পরিধান করে মুহূর্তেই হয়ে উঠেছেন ‘শক্তিশালী মানুষ’।

টেসলার স্টলে হিউম্যানয়েড রোবট ‘টেসলা বট’ সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। এই রোবটটি গাড়িতে ব্যবহৃত অটোনোমাস ড্রাইভিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষের মতো হাঁটা, জিনিস তোলা বা বহন করার কাজ করতে পারে। ২০২৫ সালে এর উত্পাদন ৫০ হাজারে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রদর্শনী

প্রদর্শনীর ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স জোন’-এ দেখা গেলো রোবটিক কুকুর, স্মার্ট প্রস্থেটিক হাত এবং আরও অনেক উদ্ভাবনী প্রযুক্তি। ইউনি টেকনোলজি, টাইগার রোবটিকসের মতো কোম্পানিগুলো তাদের সর্বশেষ প্রযুক্তি উপস্থাপন করেছে।

এআই-এর বিস্তার: দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠছে

আইফ্লাইটেক-এর স্মার্ট নোটটেকার থেকে চায়না পেট্রোলিয়ামের অটোমেটেড ফুয়েলিং রোবট, এমনকি চায়না মোবাইলের এআই-চালিত খেলনা— কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রবেশ করছে।

ওএসআইএম তাদের ৫-সেন্স ম্যাসেজ চেয়ার নিয়ে এসেছে, যা এআই ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর স্ট্রেস লেভেল বিশ্লেষণ করে পার্সোনালাইজড ম্যাসেজ দেয়। এ ছাড়াও শাওইনের ওপেন-ইয়ার হেডফোন, স্যানুও (三诺)-এর ব্লাড সুগার মনিটর—এসবই দেখিয়েছে কীভাবে প্রযুক্তি নতুন ভোক্তা চাহিদা তৈরি করছে।

চীনের বাজার: উদ্ভাবনের জন্য আদর্শ পরীক্ষাগার

বিশ্লেষকদের মতে, চীনের বিশাল ও বৈচিত্র্যময় বাজার উদ্ভাবনকারীদের জন্য একটি আদর্শ পরীক্ষার স্থল। এখানে নতুন প্রযুক্তি দ্রুত বাস্তবায়ন ও উন্নয়নের সুযোগ পায়।

যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্সসহ ২৫টি দেশের ৪০টিরও বেশি ব্র্যান্ড এবারের মেলায় ১০০টির বেশি নতুন পণ্য উন্মোচন করেছে। অনেক কোম্পানির প্রতিনিধিরা বলেছেন, চীনের ভোক্তাদের সাথে সরাসরি সংযোগ স্থাপন তাদের পণ্য উন্নয়নে সহায়তা করে।

চীনের ১৪০ কোটি জনসংখ্যা ও ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণী এটিকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে পরিণত করেছে। ভোক্তা মেলার এই আয়োজন দেখিয়েছে কীভাবে চীনের বাজার বৈশ্বিক উদ্ভাবনকে এগিয়ে নিচ্ছে এবং সকলের জন্য প্রযুক্তির সুফল নিশ্চিত করছে।