বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: বান্দরবন জেলার লামা উপজেলায় একদল বন্যহাতি তান্ডব চালিয়ে তছনছ করে দিয়েছে উপজেলার সরই ইউনিয়নের দূর্গম পাহাড়ি পুইট্টারঝিরি ও আজিজনগর ইউনিয়নের পূর্বচাম্বী আমতলী পাড়ার ৫টি বসতঘর। এ সময় হাতির আক্রমণে নিহত হন রহিমা বেগম (২০) নামের এক বাক প্রতিবন্ধী।
বুধবার রাতে ১৪-১৫টি হাতি তান্ডব চালিয়ে এসব বসতঘর তছনছ করে দেয়। বর্তমানেও হাতিগুলো ওই গ্রাম সংলগ্ন পাহাড়ে অবস্থান করায় আতংকে আছেন স্থানীয়রা।
এলাকাবাসীরা জানান, গহিন পাহাড় থেকে একদল বন্যহাতি মঙ্গলবার রাতে সরই ইউনিয়নের পুইট্টারঝিরি গ্রামে নেমে পড়ে। হাতিগুলো প্রথমে পাড়ার বাসিন্দা আবুল মিয়ার বসতঘর ভাংচুর শুরু
করে। পরে একে একে মো. জাহাঙ্গীর, নুরুল কবির ও আজিজনগর ইউনিয়নের পূর্বচাম্বী আমতলী পাড়ার বাসিন্দা সোলায়মান ও মফিজুর রহমানের বসতঘর ভাংচুর করে। হাতির আক্রমনে
ঘটনাস্থলেই মারা যান রহিমা বেগম।
হাতি আক্রমনের শিকার নুরুল কবির, জাহাঙ্গীর আলম ও সোলায়মান বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে ১৪-১৫টি বন্যহাতি গ্রামে ঢুকে পড়ে। এ কথা জানাজানি হলে লোকজন
আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে। রাতে গ্রামের মানুষ এক ঘণ্টার জন্যও ঘুমাতে পারেনি। হাতি কখন কার বাড়িতে ঢুকে পড়ে, এই ভয়ে মানুষ নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। তারা আরও বলেন, হাতিগুলো প্রথমে বাড়ির চারিদিকে ঘেরাও করে ফেলে। বিশেষ করে ঘরের রজা জানালার পাশে পাহারাারের মত দাঁড়িয়ে থাকে। আর ঘর ভাঙ্গা শুরু করে। পরে ঘরে থাকা ধান চাল খেয়ে ফেলে। রাতজেগে আগুনের কুন্ডুলি জ্বালিয়ে বাড়ি ঘর পাহারা দিয়ে হাতির আক্রমন থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্ঠা
চালিয়েও রক্ষা পাওয়া যাচ্ছেনা।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হারিছ মিয়া ও নাছির উদ্দিন জানান, অনেক ক্ষেত্রে রাত জেগে আগুন জ্বালিয়ে, ঢোল পিটিয়ে ও চিৎকার করেও বন্যহাতির লকে সরানো যায় না। বেশি ভয় খোলে
গায়ের দিকে তেড়ে আসে হাতিগুলো। এ কারণে চেয়ে দেখা ছাড়া আমাদের পক্ষে কিছুই করার থাকেনা।
এদিকে লামা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. আলমগীর জানায়, হাতির আক্রমণে নিহত প্রতিবন্ধী যুবতীর লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম কায়চার জানান, উপজেলার সরই ও আজিজনগর ইউনিয়নের কয়েকটি পাড়ায় বন্যহাতির তান্ডব চালিয়েছে বলে খবর পেয়েছি। হাতি দ্বারা নিহত প্রতিবন্ধী
যুবতী ও ক্ষতিগ্রস্তরেকে বন বিভাগের পক্ষ থেকে বিধি মোতাবেক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।