বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
কক্সবাজার: ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ গতকাল মঙ্গলবার রাতে কক্সবাজার উপকূলে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। রাত সাড়ে বারোটায় কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করেছে হামুন। এ সময়ে কমপক্ষে ৩ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর ওসমান সরওয়ার টিপু। তিনি জানান, জানান, কক্সবাজার শহরে দেয়াল ধসে একজন ও মহেশখালী এবং চকরিয়ায় গাছচাপায় ২ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে কক্সবাজার পৌরসভা ৭ নং ওয়ার্ডে দেয়াল ধসে আবদুল খালেক (৩৮) নিহত হন। অপরদিকে মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের মুন্সির ডেইল গ্রামে গাছচাপায় হারাধন নামের একজনের মৃত্যু হয়। চকরিয়া উপজেলার বদরখালীতে আসকর আলী নামের আরেকজন মারা গেছেন।
সন্ধ্যা সোয়া ৭টা হতে একটানা রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কক্সবাজার উপকূল ও এর আশপাশের অঞ্চল দিয়ে ব্যাপক ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়। একই সাথে চলে বজ্রসহ বৃষ্টিও। কক্সবাজার শহরের অনেক এলাকায় ঝড়ের আঘাতে গাছ উপড়ে পড়ে। যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। সন্ধ্যার পর থেকে কক্সবাজার শহরে ও আশেপাশের এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে সোমবার রাত থেকেই বৃষ্টিপাত শুরু হয় কক্সবাজারে। মঙ্গলবার সারাদিন বৃষ্টি অব্যাহত ছিল। এ সময় হালকা বাতাস হলেও সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে হঠাৎ ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়। এ সময় বৃষ্টিপাতও শুরু হয়। বাতাসের তীব্রতা এতই বেশি ছিল যে, সড়কে চলাচল করা ইজিবাইকগুলো উড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। এছাড়াও কাঁচা ও আধা কাঁচা ঘরবাড়ির চাল উড়ে গেছে, ভেঙে পড়েছে অনেক ঘরের দেয়াল, উপড়ে গেছে গাছপালা।
সড়কের উভয় পাশের ব্যাংক-বীমা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ছোট-বড় সাইনবোর্ড বাতাসের তোড়ে উপড়ে সড়কে পড়ে যায়। বিভিন্ন স্থান হতে টিনসহ হালকা পণ্যগুলো উড়ে একস্থান হতে অন্যস্থানে সরে যায়। সমানে ভেঙে পড়েছে গাছের ডালপালা। শহরের অনেক উপসড়কেও গাছ ভেঙে পড়ে জন চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ঝড়ো বৃষ্টি শুরুর পর থেকেই বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ।
বিপদ সংকেত নেমে গেছে, এখন সতর্ক সংকেত
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে সাত নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে তিন নম্বর (পুনঃ) তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোতে পাঁচ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে তিন নম্বর (পুনঃ) তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এদিকে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
পূর্ণিমার ৪ দিন আগে আঘাত, গতি পায়নি তাই
বাংলাদেশ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ টিম জানায়, ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ বেশ শক্তি নিয়ে কক্সবাজারের মহেশখালি, কুতুবদিয়া ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকা অতিক্রম করেছে। এটি দ্রুত অনেক বেশি বৃষ্টি ঝরিয়ে দুর্বল হয়ে যায়। আবহাওয়া বিশ্লেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, ঘুর্ণিঝড়টি পূর্ণিমার চারদিন পূর্বে আঘাত করায় গতি পায়নি। সাগরে ছিলো ভাটা।