Home চট্টগ্রাম ১৪ অক্টোবর থেকে ইলিশ ধরতে মানা

১৪ অক্টোবর থেকে ইলিশ ধরতে মানা

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম: ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর (২২ দিন) পর্যন্ত সাগরের মোহনায় এবং নদ-নদীতে ইলিশসহ সব ধরণের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

সারাদেশে মা ইলিশ সংরক্ষণ, জাটকা নিধন বন্ধে কঠোর অবস্থান এবং মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধকালীন অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ইলিশ রক্ষায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

দক্ষিণ কাট্টলীর সাগরপাড়ের রাণী রাসমণির ঘাটে দেখা যায়, সমুদ্র থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মাছ ধরে জেলেরা ঘাটে বিক্রয় করছে।

মাছ বিক্রেতা কল্যাণ দাস বলেন, কয়েকদিন পর মাছ ধরা বন্ধ হয়ে যাবে, আমরা ইলিশ মাছ যে যেখানে পারি বিক্রি করছি। দাম একটু বেশি কারণ ২২ দিন ধরে মাছ ধরতে পারবো না , বিক্রয়ও করা সম্ভব হবে না।

দেশের অন্যতম মাছের বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের ফিশারিঘাটে বাণিজ্যিক ট্রলার থেকে নামছে টনে টনে ইলিশ।

সাগরে ইলিশ ধরা পড়ায় খুশি জেলেরাও। তারা মনে করেন, গেল বছরের তুলনায় এবার আরো লাভবান হওয়া যাবে।

গত বুধ-বৃহস্পতিবার বাজারে এবং ঘাটে এক কেজির বড় ইলিশ মাছের দাম ৫০০ টাকা করে বিক্রয় করলেও শুক্রবার এবং শনিবার ঘাটে এবং বাজারে সে মাছের দাম ৮৫০-৯০০ টাকায় বিক্রয় করা হয়েছে। মাছের চাহিদা থাকলেও এ দুই-তিনদিন চড়া দামে ইলিশ মাছ বিক্রয় করা হবে বলে জেলেরা জানায়।

ইলিশ মাছ ছাড়াও লইট্যা, রূপচান্দা, কোরাল, কৈ-কোরালসহ বিভিন্ন ধরনের বড় মাছের সরবরাহ রয়েছে।

মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন, ইলিশের অভয়াশ্রমগুলোতে জাটকা ধরা বন্ধ করা এবং নিষিদ্ধ সময়ে মা ইলিশ ধরা বন্ধ করার কারণে ধারাবাহিকভাবে ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। শুধু তাই বেশি ওজনের ইলিশও এখন পাওয়া যাচ্ছে। মা ইলিশ রক্ষায় সরকার প্রজনন মৌসুম চিহ্নিত করে ২২ দিন ইলিশ শিকার, আহরণ, বাজারজাতকরণ, বিক্রি ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে। এছাড়া আট মাস জাটকা নিধন এবং ৬৫ দিন সাগরে মাছ শিকার বন্ধ থাকছে।

আশ্বিন মাসের পূর্ণিমার সময় মিলিয়ে ১৫ থেকে ১৭ দিন হচ্ছে ইলিশের ডিম ছাড়ার সময়। সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ছুটে আসে নদীতে। ইলিশকে স্বাচ্ছন্দ্যে ডিম ছাড়ার সুযোগ দিতে হয়। ইলিশ ধরা বন্ধ থাকাকালীন সারাদেশের তালিকাভুক্ত জেলেদের ভিজিএফ সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানানো হয় । ২২ দিন যাতে সাগরের মোহনা এবং নদ-নদীতে মাছে ধরতে না নামে সে কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

মৎস্য বিশেষজ্ঞ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন,এক সময় ১১ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ ছিল, পরে ১৫ দিন বন্ধ ছিল, এখন ২২ দিন ইলিশ ধরা বন্ধ। আসলে ইলিশ সারা বছরিই ডিম দেয়। তবে এই ২২ দিন ৬০-৭০ ভাগ ইলিশ ডিম দেয়। যার কারণে উপযুক্ত সময় হিসেবে এই ২২ দিনকে ধরা হয়েছে। আপাতদৃষ্টিতে এই ২২ দিন ঠিক আছে।

মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন, মা ইলিশ রক্ষা করার কারণে গত কয়েক বছরে উৎপাদন যেমন বেড়েছে, দামও কমে এসে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে এসেছে। এছাড়া সাগর ও নদ-নদীতে ধরা পড়া ইলিশের গড় ওজন গত তিন বছরে ৩৫০ গ্রাম বেড়েছে। বহির্বিশ্বে রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় দেশে ইলিশের চাহিদা পূরণও হচ্ছে মন্তব্য মৎস্য কর্মকর্তাদের।