বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম: জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে রাজস্ব আদায়ে গত বছরের চেয়ে ৭৩% ও সেপ্টেম্বর মাসে ১৫৩% প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে কুমিল্লা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট।
করোনাকালে বৈশ্বিক অর্থনীতি যখন নাজুক অবস্থায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি অর্জন চ্যালেঞ্জের পথে তখন ব্যতিক্রমী প্রবৃদ্ধি নিয়ে কাজ করছে কুমিল্লা কমিশনারেট। ব্যতিক্রমী অগ্রগতির পেছনের পরিশ্রমী কর্মীদের পুরস্কৃত করার জন্য গত ২৭ অক্টোবর এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কুমিল্লা কমিশনারেট। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠানটি করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কমিশনার জনাব মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী।
তিনি বলেন, সারাদেশের কর্মকর্তাদের এরকম কাজের ধারা অব্যাহত থাকা উচিত। গভীর রাতে নিবারণ কার্যক্রম, প্রত্যন্ত অঞ্চলের ইটভাটাগুলোতে অভিযান পরিচালনা এবং অফিস সময় ছাড়াও বাড়তি সময় কাজ করায় কর্মকর্তাদের মনোভাব প্রশংসনীয়। দক্ষ, সক্ষম, উপযুক্ত ও রাজস্ব বৃদ্ধিতে সকল কর্মকর্তাদের ভবিষ্যতেও পুরস্কৃত করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন ।
অনুষ্ঠানে মোট ৫৫ জন কর্মকর্তাকে পুরস্কৃত করা হয়। ২৩ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে তাঁদের বিশেষ অবদানের জন্য সার্টিফিকেট ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিত্তিতে কর্মকর্তাদের শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি ও পুরস্কার দেয়া হয়। এ সবের মধ্যে রয়েছে রিটার্ন যাচাই, নিবারক কার্যক্রম, বকেয়া আদায়, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, নিরীক্ষা ও তদন্ত, রাজস্বের নতুন ক্ষেত্র বৃদ্ধিকরণ, নিবন্ধন ও মূসক জরিপ, সিগারেট ও বিড়ির নকল ব্যান্ডরোল সনাক্তকরণ।
পুরস্কারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সম্মাননা ও স্বীকৃতিতে নিজ নিজ বক্তব্যে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। সরকারি দায়িত্ব পালনের জন্যে এ ধরনের স্বীকৃতি কারো ক্ষেত্রে জীবনে প্রথম।
অনুষ্ঠানে সেরা বিভাগীয় কর্মকর্তার স্বীকৃতি অর্জন করেন নোয়াখালী বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা জনাব মোঃ ফখর উদ্দিন। তিনি বলেন করোনাকালে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধকে সামনে নিয়ে রাজস্ব সৈনিকদের কাজ করতে হবে। এ পুরস্কার আমাদের দায়বদ্ধতা বাড়িয়া দিয়েছে। তিনি সিগারেট/বিড়ি আটক ও অনলাইন রিটার্ন পেশে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এ স্বীকৃতি পান।
সেরা রাজস্ব কর্মকর্তা হন বেলাল উদ্দিন ফাইজুল সার্টিফিকেট মামলা নিষ্পত্তিতে অবদানের জন্য। তিনি বলেন সরকারের রাজস্ব বেশী আদায়ে ভূমিকা রাখতে পেরে নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করছি।
সেরা সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হন নন্দিতা ভৌমিক। তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েও অনলাইন রিটার্ন পেশে নিজ বিভাগসহ অন্য বিভাগকে সহায়তা ও পরামর্শ সেবা দিয়ে ব্যতিক্রমী ভূমিকা রাখেন। নন্দিতা ভৌমিক বলেন, প্রতিযোগিতায় মধ্য দিয়ে কাজ করার আনন্দই আলাদা। সাফল্যে আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয়। আমাদের স্বীকৃতি কাস্টমস বিভাগের ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত।
এছাড়া, কর্মচারীদের মধ্যে মোঃ মনির হোসেন, গাড়ীচালক মোঃ জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া, অফিস সুপারিনটেনডেন্ট মোঃ ছালাহউদ্দিন তালুকদার পুরস্কৃত হন।পুরস্কারপ্রাপ্ত অন্যান্যরা হলেন: সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা খ.ম. রিশাদুল আলম নূর, ফেরদৌস ওয়াহিদ, বিপ্লব চন্দ্র দাস, রাজীব রায়, রিজুয়ান রশিদ রিপন, মোঃ সরোয়ার হোসেন, মাসুদ রানা, মোঃ আবু সায়েদ, সুমন চন্দ্র দে, মোঃ মাহমুদুল হাসান মুন্সী, মোঃ জসিম উদ্দিন, মোঃ হারনুর-অর-রশিদ, মোঃ সুবা মিয়া তালুকদার ও প্রনব তঞ্চঙ্গ্যঁ; রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান, মোঃ মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া, মোঃ আমিনুল হক, মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, তপন কুমার দাশ ও মোঃ আমীর হোসেন। এ বিষয়ে কুমিল্লা কমিশনারেটের সহকারী কমিশনার (সদর) ছালাউদ্দিন রিপন বলেন, কুমিল্লা কমিশনারেট জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্ধারিত সূচকসমূহের বেশিরভাগ সূচকে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। যে সকল পরিশ্রমী কর্মকর্তা এতে ভূমিকা রেখেছেন তাঁদের স্বীকৃতি প্রদান আবশ্যক হয়ে পড়েছে। রাজস্ব আদায়ে প্রথম স্থান অর্জনের পথ কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। পুরস্কারের ধারা অব্যাহত থাকলে সকলের কাজের মান বাড়ে। রাজস্ব ও অন্যান্য সূচকের ধারায় উন্নতি অব্যাহত থাকবে বলে কর্মকর্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
- এক নজরে কুমিল্লা কাস্টমস কার্যক্রম
রাজস্বের প্রবৃদ্ধি
:সেপ্টেম্বরে ১৫৩%
:সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৭৩%
অনলাইনে রিটার্ন পেশ : ৯৩.৭১%
ইটভাটার বকেয়া আদায়ে প্রবৃদ্ধি :৬৪৩%
স্থান ও স্থাপনা খাতে প্রবৃদ্ধি :২১%
সার্টিফিকেট মামলা নিষ্পত্তি :৪০ টি
ভ্যাট মামলা :৩৯ টি
শুল্ক ফাঁকি মামলা :১৬ টি
জরিপকৃত প্রতিষ্ঠান :৩৯৪৪ টি
রিটার্ন যাচাই করে ফাঁকি উদঘাটন :৫১ টি
নিবারণ অভিযান :৯৫৭ টি