Home পর্যটন ৬০০ বছরের সাক্ষী সনগাঁও তিনগম্বুজ মসজিদ

৬০০ বছরের সাক্ষী সনগাঁও তিনগম্বুজ মসজিদ

গৌতম চন্দ্র বর্মন, ঠাকুরগাঁও থেকেঃ ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী  নিদর্শন ও প্রত্নসম্পদের অন্যতম সনগাঁও তিন গম্বুজ জামে মসজিদ।

বালিয়াডাঙ্গী থেকে ০৪ কিলোমিটার দুরে কালমেঘ বাজার থেকে ২ কিলোমিটার পৃব দিকে দুওসুও ইউনিয়নে অবস্থিত। স্থানীয়দের তথ্য মতে, মসজিদটি কোন আমলে  তৈরি হয়েছে তার সঠিক ধারণা  নেই কারো। তবে তাঁরা বংশানুক্রমে জেনেছেন, প্রায় ৬০০ বছর পূর্বে মোঘল সম্রাট শাহ আলমের সময়ে মুসলিমদের ধর্ম প্রচার ও নামাজ আদায়ের জন্য এই জামে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়।
  জানা গেছে, মসজিদটি নির্মাণের পর সুধিবাদ নামক এক পীর ধর্মচর্চা ও জ্ঞান প্রচারের জন্য সনগাঁও এলাকায় আসেন। সেখানে তিনি সুদীর্ঘ দিন নামাজ আদায় এবং ধর্ম প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এরপরে সেই পীরের মৃত্যু হলে মসজিদটির পাশেই তার দাফন হয়। সমাধি এখন পর্যন্ত অক্ষত রয়েছে। তবে এই সুধিবাদ পীর কোন দেশ থেকে এদেশে এসেছিলেন তা জানা যায়নি।
সরেজমিনে দেখা যায় যে, মসজিদটিতে তিনটি গম্বুজ ও তিনটি দরজা রয়েছে। মসজিদটিতে পোড়ামাটির ফলকে বিভিন্ন নকশার কারুকাজ  ছিল। তবে বর্তমানে সেগুলো বিলুপ্তপ্রায়। মসজিদের দক্ষিণ পাশে রয়েছে একটি পাকা কূপ। কূপের গায়ে পোড়া মাটির অস্পষ্ট বাংলালিপি খোদাই করা রয়েছে। মাটি ভরাট থাকায় কূপের গায়ে বাংলালিপিতে পোড়ামাটির অস্পষ্ট খোদাই করা লেখা পড়া যায়নি।
  মসজিদটি এখনো সুরক্ষিত রয়েছে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের পাশাপাশি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পাঠদান কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে। মুয়াজ্জিন ইয়াকুব আলী সাংবাদিকদের জানান, মসজিদটিতে একটিমাত্র সারি থাকার কারণে অনেক মুসল্লির নামাজ আদায়ে সমস্যা হচ্ছিল। এ জন্য বারান্দায় টিনের ছাউনি দিয়ে সারি সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। তবে পুরোনো মসজিদটির য ব্যবস্থা আগের মতোই রাখা হয়েছে। কিন্তু গম্বুজগুলোর ওজন বেশি হওয়ার কারণে ধীরে ধীরে মাটির নিচে দেবে যাচ্ছে মসজিদটি এবং পোড়ামাটির ফলকে বিভিন্ন নকশার যেসব প্রতিকৃতি ছিল, বর্তমানে সেগুলো প্রায় বিলুপ্ত হওয়ার পথে।
স্থানীয় মুসুল্লিরা আরো জানান, শুক্রবার জুম্মার নামাজে তিন শতাধিক মুসল্লি মসজিদটিতে আসে। দেখাশোনার দায়িত্বে একজন মুয়াজ্জিন, দুজন ইমাম রয়েছেন।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যোবায়ের হোসেন বলেন,  ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসন থেকে প্রাচীন নিদর্শন ও প্রত্নসম্পদগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সনগাঁও তিনগম্বুজ মসজিদটিও তালিকায় রয়েছে।