মাজার ই শরিফ ঘিরে ফেলেছে
বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
আফগানিস্তানের উত্তরে মাজার ই শরিফ শহরটি ঘিরে ফেলেছে তালিবান। ছত্রভঙ্গ হয়ে গিয়েছে সরকারি সেনাবাহিনী। তাদের ঐক্যবদ্ধ করার জন্য শহরে গেলেন প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি। গত শুক্রবার থেকে দেশের মোট ন’টি শহর দখল করেছে তালিবান। মাজার ই শরিফ যাতে জঙ্গিরা দখল না করতে পারে, সেজন্য হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চালাচ্ছে আফগান সেনা। আশরফ গনি বিবৃতিতে বলেছেন, দেশের উত্তরাঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা দরকার। সেজন্য আমি মাজার ই শরিফে যাচ্ছি।
বর্তমানে প্রতিদিনই শহরের ওপরে হামলা চালাচ্ছে তালিবান। শহরতলি অঞ্চল ইতিমধ্যে চলে গিয়েছে তাদের দখলে। প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি সম্ভবত মাজার ই শরিফে গিয়ে স্থানীয় স্ট্রংম্যান আত্তা মহম্মদ নুরের সঙ্গে কথা বলবেন। এছাড়া কুখ্যাত গোষ্ঠীপতি আবদুল রশিদ দস্তুমের সঙ্গেও তাঁর আলোচনা হতে পারে। তালিবানকে ঠেকানোর জন্য তিনি নুর ও দস্তুমের সাহায্য চাইবেন।
মাজার ই শরিফ যদি তালিবানের দখলে যায়, তাহলে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চল পুরোপুরি সরকারের হাতছাড়া হয়ে যাবে। একসময় তালিবান বিরোধী মিলিশিয়ার বড় ঘাঁটি ছিল ওই অঞ্চলে। মাজার ই শরিফের পূর্বে বদখশানের রাজধানী ফৈজাবাদ কিছুদিন আগেই হাতছাড়া হয়েছে সরকারের। তালিবান সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছে, ওই শহর এখন তাদের দখলে।
গত মে মাসে আফগানিস্তান থেকে ন্যাটো বাহিনী সরতে শুরু করার পরে তালিবানের তৎপরতা বৃদ্ধি পায়। তাদের দাবি, দেশের ৯০ শতাংশ এলাকা এখন তাদের দখলে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি ৩১ অগাস্টের মধ্যে সব সেনা সরিয়ে আনবেন। আফগান সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, এবার আপনাদের নিজেদেরই লড়াই চালাতে হবে।
গত সপ্তাহে মার্কিন প্রশাসন নির্দেশ দেয়, সেদেশে এখনও আমেরিকার যে নাগরিকরা রয়ে গিয়েছেন, তাঁরা শীঘ্র চলে আসুন। কাবুলে মার্কিন দূতাবাস থেকেও বলা হয়েছে, তাদের ক্ষমতা অত্যন্ত সীমিত। কোনও মার্কিন নাগরিক বিপদে পড়লে তাঁকে সাহায্য করা সম্ভব নয়। দূতাবাসের বহু কর্মীকে ইতিমধ্যে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনও মার্কিন নাগরিকের কাছে যদি দেশে ফেরার জন্য প্লেনের টিকিট কেনার অর্থ না থাকে, দূতাবাস থেকে ধার দেওয়া হবে।
মার্কিন বিদেশ দফতর থেকে তাদের নাগরিকদের আফগানিস্তানে যেতে বারণ করা হয়েছে। আফগানিস্তানের ক্ষেত্রে জারি করা হয়েছে লেভেল ফোর ট্রাভেল অ্যাডভাইসারি। যখন কোনও দেশে ভ্রমণ অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে ওঠে, তখন তার সম্পর্কে লেভেল ফোর ট্রাভেল অ্যাডভাইসারি জারি করা হয়। মার্কিন দূতাবাস থেকে বলা হয়েছে, কাবুলের বাইরে থেকে এখন খুব কম বিমান ছাড়ছে। ঘন ঘন ক্যানসেল হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ফ্লাইট। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি বলেন, “তালিবানের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় অনেকের ওপরে প্রতিশোধ নেওয়া হচ্ছে। আমরা আফগানিস্তানের পরিস্থিতির ওপরে নজর রাখছি।”