বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
রাজশাহী: স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শহীদ জামিল ব্রিগেড ফোন পেলেই বিনামূল্যে রোগীদের বাড়ি বাড়ি অক্সিজেন পৌছে দিচ্ছে। এছাড়াও রোগীকে জরুরিভাবে হাসপাতালে নিতে যেন কোনরকম পরিবহণ দুর্ভোগ না পোহাতে হয়; তার জন্য চালু করা হয়েছে ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স। গত ১৫দিন ধরে নগরজুড়ে ঝড়-বৃষ্টি এবং মধ্যরাতের প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে দিয়ে চলেছেন এই মানবিক সেবা। মানবপ্রেমী এ উদ্যোগ এখন প্রশংসীত হচ্ছে সর্বমহলে।
গত (৫ জুন) রাজশাহী কলেজ প্রাঙ্গনে ওয়ার্কার্স পার্টির নেতৃত্বাধীন ৫০ জন তরুণ-যুবকদের নিয়ে মানবসেবার লক্ষ্যে শহীদ জামিল ব্রিগেড যাত্রা শুরু করে। এর পরে প্রথমে নগর এবং পরবর্তীতে থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ, করোনা সচেতনতামূলক প্রচার মাইকিংসহ জীবাণু নাশক স্প্রে করার মতো বিভিন্ন কার্যক্রম চালান তারা। এছাড়াও মানুষকে স্থানীয় প্রশাসন ঘোষিত ‘লকডাউন’ মানাতে প্রায়শই তাদের দেখা গেছে রাজপথে। রাজশাহীর করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে গত ১৮ জুন রোগীদের জন্য উদ্বোধন করা হয় বিনামূল্যে অক্সিজেন ও অক্সিজেন সম্বলিত অ্যাম্বুলেন্স সেবা।
‘করোনা সংকটে মানবতার সেবায়, মানুষের পাশে আমরা আছি অবিচল’- এই শ্লোগান নিয়ে জীবন বাজি রেখে মানুষের জন্য কাজ শুরু করে শহীদ জামিল ব্রিগেড। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, গণমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে তারা নিজেদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রচার প্রচারণা চালায়। একপর্যায়ে তাদের এই মহতি উদ্যোগের বিষয়টি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। নির্ধারিত নম্বরে ফোন দিয়ে সহযোগিতা চাইলে সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবকরা অক্সিজেন সিলিন্ডার ও অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে হাজির হচ্ছেন রোগীর বাড়ি। এ পর্যন্ত অন্তত অর্ধ শতাধিক জন মুমূর্ষু রোগীকে তারা অক্সিজেনসহ অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিয়েছেন দিয়েছেন।
ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশার ব্যবস্থাপনা ও নির্দেশনায় ব্রিগেডের সকল কার্যক্রম পরিচালনা ও তদারকি করছেন দলটির নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও ব্রিগেডের প্রধান সমন্বয়ক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু। জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল এই সংকটকালে যেভাবেই হোক মানুষের পাশে দাঁড়ানো। আমাদের সাধ্যমতো আমরা সেই চেষ্টা চালচ্ছি। ব্রিগেডের ৫০ জনেরও বেশি সদস্যরা তাদের জীবন বাজি রেখে মানুষকে সেবা দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘হটলাইনে দেয়া তিনটি মোবাইল নম্বরের মধ্যে আমার একটি। নম্বরগুলো ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় এখন প্রতিনিয়তই ফোন আসছে। বেশিরভাগ ফোন মধ্যরাত ও ভোরের দিকে আসছে। আমরা সাথে সাথে রেসপন্স করছি। মহানগরের মধ্যে হলে মাত্র ২০-২৫ মিনিট এর মধ্যে অক্সিজেন-অ্যাম্বুলেন্স’র মধ্যে যার যেটা প্রয়োজন তাকে সেটি পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এই দুই সেবার পাশে করোনা রোগী মারা গেলে তার পরিবার দাফন ও দাহ করতে যদি অনিচ্ছা প্রকাশ করে তবে আমরা শহীদ জামিল ব্রিগেডের সদস্যরা সেই দায়িত্ব নিতেও প্রস্তুত।’
শহীদ জামিল ব্রিগেডের উদ্যোগে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হয়েছে। শুক্রবার (২ জুলাই) জুমার নামাজের পরে মহানগরের ২, ৩, ৪, ৫, ১৭, ২৪, ২৬, ২৮, ২৯ ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ, করোনা সচেতনতামূলক প্রচার মাইকিংসহ জীবাণু নাশক স্প্রে করার মতো বিভিন্ন কার্যক্রম চালান বিগ্রেডের সদস্যরা। এ সময় জামিল ব্রিগেডের স্থানীয় সমন্বয়কারী ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।