বিপজ্জনকভাবে ভাবে বাড়ছে সংক্রমণ
বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
ভারতের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ফের উৎকণ্ঠার কথা বলল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। আমেরিকাকে ছাপিয়েও ভারতের করোনা ঢেউ সাঙ্ঘাতিক, হু-র বক্তব্য এমনটাই।
শুক্রবার জাপানের টোকিও, ওসাকা সহ কয়েকটি শহরে জরুরি অবস্থা জারি হওয়ার পরেই হু প্রধান টেড্রস অ্যাডহানম ঘেব্রেইসাস সতর্ক করে বলেছিলেন, অতি মহামারীর এই দ্বিতীয় বছর আরও বিধ্বংসী হতে পারে। কুড়ি সালে করোনার যে রূপ দেখা গেছে একুশে তা আরও প্রাণঘাতী।
হু কর্তা ঘেব্রেইসাস বলছেন, ভারতে কোভিড রোগীর সংখ্যা বিপজ্জনকভাবে বাড়ছে। রাজ্যে রাজ্যে সংক্রমণের হার উদ্বেগের কারণ। হু-র বক্তব্য মহামারীর সঙ্গে যুঝতে ভারতে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, মাস্ক, ওষুধপত্র সহ যাবতীয় চিকিৎসার সরঞ্জাম পাঠিয়ে সাহায্য করা হচ্ছে। সংক্রমণের নিরিখে ভারতের পরিস্থিতিই এখন সবচেয়ে বড় চিন্তার কারণ। হাসপাতালে ভর্তি কোভিড রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে, করোনায় মৃত্যু বাড়ছে। দৈনিক আক্রান্ত চার লাখের কাছাকাছি চলে গেছে।
মাত্র ছ’মাসের মধ্যে ভারতে কোভিড কার্ভ দ্বিগুণ হয়েছে, বলছেন হু প্রধান। ডিসেম্বরের ১৯ তারিখে ভারতে করোনা রোগীর মোট সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছিল। মে মাসের মধ্যেই তা ২ কোটির চৌকাঠ পেরিয়ে গেছে।
হু কর্তা বলছেন, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, মিশরে কোভিড রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আমেরিকা ও আফ্রিকার কয়েকটি রাজ্যেও করোনা সংক্রমণ সাঙ্ঘাতিক।
ভারতে কোভিড মহামারীর জন্য রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সমাবেশ, উৎসব-অনুষ্ঠানকেই দায়ী করেছিল হু। বলা হয়েছিল, মার্চের আগেই সতর্ক করা হয়েছিল করোনাভাইরাসের আরও কয়েকটি মিউট্যান্ট প্রজাতি মাথা চাড়া দিতে পারে। ভাইরাসের জিনের বিন্যাস বদলাতে শুরু করে দিয়েছে, ফের সংক্রমণ প্রবল আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সতর্কতা সত্ত্বেও সচেতনতা ছিল না।
কোভিড কার্ভ যখন শীর্ষে, তখন রমরম করে চলছিল কুম্ভমেলা। ৭০ লাখ পুণ্যার্থী-দর্শনার্থীর ভিড়ে গঙ্গার ঘাটে ছিল কাতারে কাতারে মানুষের ভিড়। ফেব্রুয়ারি থেকেই দেদার সামাজিক অনুষ্ঠান, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, নির্বাচনী প্রচার, খেলা, মেলা, ভিড়-জমায়েত সবই হয়েছে। তাই করোনায় তার বিশাল ফণা তুলে ছোবল বসিয়েছে ভারতের বুকে।
দিনকয়েক আগে করোনার ভারতীয় প্রজাতি নিয়েও উদ্বেগের কথা বলেছিল হু। কোভিডের ডবল ভ্যারিয়ান্ট (বি.১.৬১৭) তথা ভারতীয় প্রজাতি বিশ্বের ৪৪টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে বলে দাবি করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। করোনার এই সুপার-স্প্রেডার ভারতীয় প্রজাতিকে ‘উদ্বেগজনক’ তকমাও দেওয়া হয়েছিল।
হু-র দাবি ছিল, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ যে সংক্রামক চেহারা নিয়েছে তার কারণই হল এই ডবল ভ্যারিয়ান্ট প্রজাতি। ব্রিটেন স্ট্রেনের পরে এই প্রজাতিই প্রাণঘাতী হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বে। খুব দ্রুত সংক্রমিত হতে পারে এই প্রজাতি। এমনকি ভ্যাকসিনের ডোজেও এই প্রজাতিকে কাবু করা যাবে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য মেলেনি বলেই দাবি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।