বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
অভয়নগর ( যশোর ): দেশের ১০ম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল-ইপিজেড তৈরির কাজ শুরু হয়েছে অভয়নগরে। ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
এই ইপিজেড তৈরিতে ১ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা খরচের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ইপিজেডে সর্বমোট ৪৩৮টি শিল্প প্লট তৈরি করা হবে।
যশোর ইপিজেড চালু হলে সরাসরি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে দেড় লাখ মানুষের। এর বাইরে আরও তিন লাখ মানুষ কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে বলে মনে করছেন বেপজা কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ-বেপজা মনে করছে, প্রস্তাবিত যশোর ইপিজেডে দু’বিলিয়ন ডলার বিদেশি বিনিয়োগ হবে। একইসাথে বছরে ২.৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হবে এখান থেকে। প্রকল্প প্রস্তাবটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য ইতিমধ্যে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে বেপজা।
অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের চেঙ্গুটিয়া, মহাকাল, প্রেমবাগ, বালিয়াডাঙ্গা, আমডাঙ্গা আরাজি বাটিরঘাট, মাগুরা ও রাজাপুর মৌজায় ৫৬৫.৮৭১ একর জমিতে স্থাপিত হতে যাচ্ছে এই ইপিজেড।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত যশোর ইপিজেড স্থাপনের লক্ষ্যে আজ বৃহস্পতিবার মূল্যায়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। এখানে প্রাথমিক অনুমোদন পেলে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ-একনেকের সভায় উপস্থাপন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর বেপজার ৩৪তম বোর্ড সভায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়নে যশোরে ইপিজেড স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বেপজার নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) নাজমা বিনতে আলমগীর জানিয়েছেন, সম্ভাব্যতা সমীক্ষার প্রতিবেদন অনুযায়ী তৈরি পোশাক, টেক্সটাইল, কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, চামড়াজাত পণ্য, রাসায়নিক এবং ওষুধ শিল্পকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে যশোর ইপিজেডে।
যশোরে ইপিজেড স্থাপনের জন্য এখানকার ব্যবসায়িক নেতারা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। যারা বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র তৈরি করেন তাদের জোরালো দাবি রয়েছে ইপিজেড স্থাপনের জন্য। বিশেষ করে যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান বিভিন্ন ফোরামে এ দাবি জানিয়ে আসছেন। তার সাথে আরও কয়েকজন ব্যবসায়ী নেতা ইপিজেড করার দাবিতে সোচ্চার রয়েছেন। এসব ব্যবসায়ী নেতা বলছেন, ইপিজেড হলে কেবল যশোর না, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্র্থনীতির চেহারা বদলে যাবে। সরাসরি কর্মসংস্থানের পাশাপাশি লাখ লাখ মানুষ পরোক্ষভাবে কর্মক্ষম হবেন। এই অঞ্চল বেকারত্বের অভিশাপমুক্ত হবে। সবকিছুতে একটি গতি আসবে বলে মনে করছেন তারা।
এ বিষয়ে চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, ইপিজেডে নায়ক-নায়িকা, গায়ক-গায়িকা আসবে না। আসবে ব্যবসায়ীরা। অথচ এই অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের সাথে ইপিজেড নিয়ে সামান্যতম কথা বলা হয়নি। এখনই ব্যবসায়ীদের আমন্ত্রণ জানিয়ে ইপিজেড সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে। তাদেরকে উৎসাহিত করতে হবে। উদ্যোক্তা তৈরিতে উদ্যোগ নিতে হবে। এড়াতে হবে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। একইসাথে কন্টিনার টার্মিনাল নির্মাণের দাবি জানান মিজানুর রহমান খান।