Home অন্যান্য অলৌকিকভাবে সুমন বেপারির বেঁচে ফেরা

অলৌকিকভাবে সুমন বেপারির বেঁচে ফেরা

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

ঢাকা: বুড়িগঙ্গায় লঞ্চ ডুবির ১৩ ঘণ্টা পর সুমন বেপারির জীবিত ফিরে আসা এখন টক অব দ্য কান্ট্রি।

দুর্ঘটনার পর ১৩ ঘণ্টা তিনি পানির নিচেই ছিলেন। বিষয়টি অনেকেই বিশ্বাস করতে চাচ্ছেন না। আবার উদ্ধারকারীরা বলছেন, এটি অলৌকিক। কারণ এর আগেও বিদেশি এক জেলেকে তিন দিন পর পানির নিচ থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল।

পানির বেঁচে থাকা নিয়ে নানাজন নানা কথা বলছেন। সোমবার রাত থেকে সবার মুখে মুখে সুমনের ফিরে আসার গল্প । চা দোকানি থেকে শুরু করে সচিবালয় পর্যন্ত সুমনের আলোচনা ।

তবে ১৩ ঘণ্টা পর জীবিত ফিরে আসার ব্যাপারে বিজ্ঞান কী বলছে? তাকে উদ্ধারের খবর প্রচারের পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে ‘সুমন’। কেউ বলছেন, এটা মিরাকল ছাড়া কিছু নয়।

বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন : নৌ-প্রকৌশলী ওমর এস আরেফিন বলেন, যদি নৌযান উল্টে যায় তা হলে বাতাসটা বের হতে পারে না। আপনি হাঁড়িতে পানি দেন, সে সময় বাতাস ঢুকে গেলে কিছু অক্সিজেন রয়ে যায়, ফলে তার মধ্যে কোনো প্রাণী যদি থাকে সেটা বেঁচে যাবে। এটা পপুলার  সায়েন্স। উনি কী পজিশনে ছিলেন সেটাই তাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। পানির ভেতরে শ্বাস নিয়ে টিকে থাকার কোনো কারণ নেই। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের সাবেক পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) মেজর একেএম শাকিল নেওয়াজ বলেন, ১৩ ঘণ্টা পানির নিচে বেঁচে থাকা সম্ভব। যদি তিনি কোনো এয়ারটাইট রুমের মধ্যে থাকেন, যেখানে পানি ঢোকেনি এবং এয়ার পকেট সৃষ্টির মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ সচল থাকে। ফায়ার সার্ভিসের সাবেক এই কর্মকর্তা আরও উল্লেখ করেন, অতীতেও এ ধরনের ঘটনার উদাহরণ রয়েছে। দীর্ঘ সময় পর পানি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ভবন ধসে ভ্যাকুয়াম কোনো ঘরে ২৬ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকার নজির রয়েছে।

সুমন বেপারি যা জানালেন : সুমন বেপারি জানান, চোখে কিছুটা ঘুম ছিল, তখন হঠাৎ দেখি লঞ্চটিতে আরেকটি লঞ্চ ধাক্কা দিয়েছে। এটি ডুবে যাচ্ছে। ধাক্কা দেওয়ার পর এক সাইড ডুবে যাচ্ছিল, আমি দৌড়ে লঞ্চের আরেক প্রান্তে গেলাম। কিছুক্ষণ পর সেই সাইডও ডুবে গেল। এরপর আমি ওখানেই ঘোরাঘুরি করছিলাম। আল্লাহ আমাকে কোন জায়গায় রেখেছে আমি নিজেও বলতে পারব না। তবে মনে আছে যে, পানির নিচে যাওয়ার পর আমি লঞ্চের একটা রড ধরে ছিলাম। লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার পরই আমি পানির ভেতরে ছিলাম। পরে আল্লাহ আস্তে আস্তে আমাকে একটি জায়গায় নিয়ে আসছে, সেখানে কোনো পানি ছিল না। পা পর্যন্ত একটু পানি ছিল, আমি সেই পানি দিয়ে ওজু করেছি। এরপর দোয়া-দরুদ পড়েছি।

সুমন জানান, যতদূর মনে আছে লঞ্চের ইঞ্জিন রুমের পাশের একটি রুমে ছিলেন এবং লঞ্চের চালককে অদক্ষ বলে মনে হয়েছে তার।