Home বিনোদন ললনাদের চোখের জলের জোর কত?

ললনাদের চোখের জলের জোর কত?

বিজ্ঞানীরা বলছেন, মেয়েদের চোখের জলে নাকি জাদু আছে। এমনিতেও মেয়েদের কান্নাকাটি করতে দেখলে মন গলে জল হয়ে যায় অনেক পুরুষেরই। তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠা রাগী, খিটখিটে পুরুষও মেয়েদের চোখের জলের কাছে এক্কেবারে নস্যি। আর সুন্দরী ললনাকে কাঁদতে দেখলে তখন আর রাগ পুষে রাখতে পারে ক’জন পুরুষ!

কথায় বলে, মেয়েরা নাকি শুধু কান্না দিয়েই বড় বড় দাম্পত্য কলহের সহজ সমাধান করে দিতে পারে। ঝগড়া জিততে পারে, মান-অভিমান ভাঙাতে পারে, এমনকী রাগে ফুঁসতে থাকা প্রেমিক বা স্বামীকেও নিমেষে মানিয়ে নিতে পারে। চোখের জলের নাকি এতটাই জোর।

এমন মায়াভরা অশ্রু যে কত দামি তা বিজ্ঞানীরাই হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন। আসল জাদু জলে নেই, জলের গন্ধে আছে। মানে চোখের জলের গন্ধে এমন আকর্ষণ আছে যা দুর্বাসার রাগও জল করে দিতে পারে লহমায়। উগ্রতা, আক্রমণাত্মক মনোভাব ছেড়ে রাগী, জেদি পুরুষও নাকি তখন বলতে পারে, ‘আমি একজন শান্ত শিষ্ট পত্নী নিষ্ঠ ভদ্রলোক।’

গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন চোখের জলে নাকি এমনসব উপাদান আছে যা পুরুষের হরমোনে প্রভাব খাটাতে পারে। স্নায়ুর উপর জোর খাটাতে পারে মেয়েদের চোখের জল। প্লস বায়োলজি (PLOS Biology) বিজ্ঞানপত্রিকায় এই গবেষণার খবর ছাপা হয়েছে। গবেষকদের কথায়, মস্তিষ্কের প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স ও অ্যান্টিরিয়র ইনসুলা রাগের সময় প্রচণ্ড সক্রিয় থাকে। এমআরআই স্ক্যান করে দেখা গিয়েছে, চোখের জলের গন্ধে এই দুটি অংশই নিস্ক্রিয় হয়ে পড়ে। ফলে পুরুষদের রাগ ৪০ শতাংশ কমে যায়।

চোখের জলের কি গন্ধ হয়?

চোখের জল হল গ্রন্থি নিঃসৃত তরল যার মধ্যে প্রোটিন, হরমোন, এনজাইম-সহ নানা উপাদান থাকে। অশ্রুপাতের নানা কারণ আছে, সবই শারীরবৃত্তীয়। দুঃখে চোখে জল তো আসেই আবার আনন্দেও চোখে জল আসে। চোখের জল সব সময়েই রাসায়নিক বার্তা বা সংকেত (কেমিক্যাল সিগন্যাল) বয়ে নিয়ে বেড়ায়। কোনও মহিলার চোখে জলে থাকা ‘ফেরোমন’ সামনে দাঁড়ানো কোনও পুরুষের শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের ক্ষরণের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। সেই পুরুষের যৌন উত্তেজনাকে প্রশমিত করে বা তাকে যতটা সম্ভব কমানোর চেষ্টা করে বা কমিয়ে দেয়।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, চোখের জল আমাদের ‘মুড’ কীভাবে  এবং কতটা বদলে দেয় তা গবেষণা করে দেখছেন বিজ্ঞানীরা। চোখের জল ক্ষরণের আগে নিউরনগুলি কী ভাবে চোখের কোষ, কলাগুলিকে ‘সিগন্যাল’ বা সংকেত পাঠায় তাই গবেষণা করে দেখা হচ্ছে।

চোখের জলের মাধ্যমে মানুষ তার সঙ্গী, পরিচিত, কম পরিচিত বা অপরিচিতের সঙ্গে রাসায়নিক ভাবে যোগাযোগ (কেমিক্যাল কমিউনিকেশন) গড়ে তোলে। এটাকেই বলে ‘কেমো-সিগন্যাল’। দেখা গেছে, আবেগঘন চোখের জলে অনেক বেশি প্রোটিন থাকে। চোখ ভাল রাখার জন্য সাধারণ চোখের জলে অতটা পরিমাণে প্রোটিন থাকে না। আসলে চোখের জলে গন্ধ নেই, কিন্তু এই কেমো-সিগন্যালই পারস্পরিক স্নায়ুর উপর প্রভাব বিস্তার করে।