Home Second Lead অস্তিত্বহীন দেশের এক পর্যটকের রহস্যময় কাহিনী

অস্তিত্বহীন দেশের এক পর্যটকের রহস্যময় কাহিনী

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

সময়টা ১৯৫৪ সাল। বাকি দিনের মতই আগত যাত্রীদের ভিড়ে কর্মব্যাস্ত জাপানের টোকিও বিমানবন্দর। দুপুর নাগাদ এই বিমানবন্দরে এসে নামে একটি প্লেন। ইউরোপ থেকে এসেছিল এই বিমানটি। টোকিয়োর হানেদা বিমানবন্দরে অবতারণ করে এক ব্যক্তি। নিয়মমাফিক চেক আউট করার সময় অন্য বিমানযাত্রীদের মতো সেও উপস্থিত হয় শুল্ক বিভাগের অধিকর্তাদের সামনে নিয়মমাফিক চেক করার জন্য। কিন্তু তার পাসপোর্ট দেখে অবাক হয়ে গেলেন টোকিও বিমানবন্দর এর কাস্টমস অফিসাররা। তারা সেই যাত্রীকে আটকালেন।

ওই ব্যক্তির পাসপোর্টে দেশের নাম উল্লেখিত ছিল ‘টরেড’। অথচ টোকিও বিমানবন্দরের কাস্টমস অফিসার এই নামে কোন দেশের অস্তিত্বের কথা জানেন না। স্বভাবতই ওই ব্যক্তি জাল পাসপোর্ট নিয়ে যাত্রা করেছে ভেবে তাকে আটক করে পুলিশ। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। পুলিশ এর প্রশ্নের মুখে পড়ে সেই ব্যক্তি জানান তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী এবং সেই ব্যাবসার একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজে তিনি টরেড থেকে জাপানে এসেছেন। কিন্তু টরেড বলে তো কোনো দেশ নেই। জাপান পুলিশ ওই ব্যাক্তির পাসপোর্ট ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নথি খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে দেখে। কিন্তু তাতে আরো অবাক হওয়ার পালা। পাসপোর্ট জাল নয়, এমনকি পাসপোর্টে অনান্য দেশে যাতায়াত করার স্ট্যাম্প মারা আছে। অথচ এ রকম কোনও দেশ পৃথিবীর মানচিত্রে নেই। কোনো কূল কিনারা খুজেঁ পান না তারা

মানুষটিকে এ বার তার দেশের অবস্থান জিজ্ঞেস করা হল। টেবিলের উপর পৃথিবীর ম্যাপ বিছিয়ে সেই ম্যাপের মধ্যে নির্দেশ করতে বলা হল, তার দেশ কোনটা। লোকটা বিন্দুমাত্র সো মলওয় না নিয়ে আঙুল রাখলো স্পেন আর ফ্রান্সের মাঝের একটি ছোট্ট দেশে। কিন্তু পুলিশ তাকে জানায় এই দেশটির নাম অ্যান্ডোরা, টরেড নয়। এই কথায় ভীষণ রেগে যায় সেই যাত্রী। সাথে সাথে একটু বিচলিত হয়। জানায় এখানে টরেড নেই কেন? হাজার বছর ধরে তো এখানেই আছে আমার দেশ।

রহস্যের সমাধান করতে না পেরে সেই ব্যাক্তিকে বিমানবন্দরের কাছে একটি হোটেলে সেই রাতের মতো রাখার ব্যবস্থা করেন অফিসাররা। কোনোভাবেই যাতে তিনি পালিয়ে না জন তার জন্য ঘরের বাইরে দু’জন রক্ষীও রাখা হয়। ঘরটিতে ছিল একটিমাত্র দরজা। ছিলনা ব্যালকনি। ঘরটি ছিল উপরতলায়। অথচ এত সুরক্ষিত ঘরে পর দিন সকালে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শুল্ক অফিসারেরা ঢুকে হতবাক হয়ে যান। দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করা সেই ঘরের মধ্যে ছিলেন না ওই ব্যক্তি। কোথায় গেলেন তিনি।

পরবর্তীকালে এই রহস্যজনক যাত্রীকে নিয়ে উঠে এসেছে নিয়ে নানা থিওরি। কেউ মনে করেন, তিনি এই সময়ের নন, টাইম ট্রাভেল করে এসেছিলেন। কারও মতে তিনি পৃথিবীর মোট অবিকল অন্য গ্রহের বাসিন্দা। তবে সব থেকে বেশী চর্চিত মতবাদ তিনি প্যারালাল ইউনিভার্স থেকে কোনো ভাবে চলে এসেছিলেন। আবার অনেকের বিশ্বাস এটি শুধুই গুজব।