Home চট্টগ্রাম পে-পাল চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে: আইসিটি সচিব

পে-পাল চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে: আইসিটি সচিব

ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ৬ষ্ঠ চট্টগ্রাম আইটি ফেয়ার-২০২৫ এর উদ্বোধন

চট্টগ্রাম: দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি ও সোসাইটি অব চিটাগাং আইটি প্রফেশনালস (এসসিআইটিপি)’র যৌথ আয়োজনে ৩দিনব্যাপী ৬ষ্ঠ চট্টগ্রাম আইটি ফেয়ার-২০২৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ১৮ জানুয়ারি ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রধান অতিথি হিসেবে মেলার উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী,  বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো: জিয়াউদ্দীন।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ও চিটাগাং চেম্বারের প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা’র সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন এবং বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ সাইফুল হাসান, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাহবুবুল হক, সোসাইটি অব আইটি প্রফেশনালস’র সভাপতি আবদুল্লাহ ফরিদ, মেলার সিলভার স্পন্সর সফোজ’র কান্ট্রি ম্যানেজার এ এইচ এম মহসিন ও টেকনোলজি পার্টনার লিংক থ্রি’র ফয়সাল বিন আমিন। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ, ব্যবসায়ী, আইটি প্রফেশনালস ও প্রশিক্ষণার্থীসহ অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন-বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রাইভেট সেক্টর ও ইন্ডাষ্ট্রিগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি ভূমিকা রাখছে তথ্য প্রযুক্তি খাতও। তাই দেশের অর্থনীতির আকার বাড়াতে তথ্য প্রযুক্তি খাতে ইনোভেশন ও এন্ট্রাপ্রিনিয়উরশীপ ডেভেলপ করার জন্য ক্যাপাসিটি বিল্ডিং এর উপর কাজ করছে আইসিটি বিভাগ। এজন্য একাডেমিয়া এবং ইন্ডাষ্ট্রির মধ্যে সমন্বয় করে এখাতের উন্নয়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সহযোগিতায় ইনোভেশন হাব এবং আইসিটি পার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা এবং সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে আইসিটি বিভাগ।

তিনি বলেন-আমাদের তরুণ প্রজন্মরা ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে লক্ষ কোটি টাকা আয় করছে। কিন্তু উপযুক্ত চ্যানেল না থাকার কারণে তারা সহজভাবে তাদের উপার্জিত অর্থ আনতে পারছে না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফ্রিল্যান্সরদের অর্থ সহজে পাওয়ার জন্য বাংলাদেশে পে-পাল চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। একই সাথে তিনি আগামী বাজেটে তথ্য প্রযুক্তি খাতের আমদানিকৃত যন্ত্রপাতির শুল্ক কমানোর লক্ষ্যে এনবিআর চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনার আশ্বাস প্রদান করেন।

বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো: জিয়াউদ্দীন বলেন-তথ্য প্রযুক্তিতে আমরা দিন দিন উন্নতি করছি। কিন্তু এ খাতে এখনও মাতৃভাষার বাংলা ব্যবহার এখনও পিছিয়ে রয়েছি। তাই এ বিষয়ে তথ্য প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞদের কাজ করা উচিত। তিনি বলেন-পৃথিবী প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। এই পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে আমাদেরকে দক্ষ হয়ে গড়ে উঠতে হবে। আমাদের জেন জি-রা প্রযুক্তি খাতে অনেক দক্ষ। তাদের এই দক্ষতা কিভাবে আরও শাণিত করা যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন।

চেম্বার প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন-বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অধিকাংশ বৃহৎ প্রতিষ্ঠানই তথ্য প্রযুক্তি খাতের। শুধুমাত্র আউট সোর্সিং এ বিশ্বব্যাপী বছরে এক ট্রিলিয়ন ডলারের বাজার রয়েছে। তাই তথ্য প্রযুক্তির এই জয়যাত্রায় আমাদের সঙ্গী হওয়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই। তিনি বলেন-ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের টেকনোলজি সম্পর্কে যেমন জানতে হবে, তেমনি প্রযুক্তি ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিত্য নতুন ইনোভেশন পৌছে দিতে হবে। তথ্য প্রযুক্তি বিকাশে চট্টগ্রাম চেম্বার অত্র অঞ্চল ও দেশের ব্যবসায়িক উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সকলের মাঝে যোগসূত্র স্থাপনের লক্ষ্যে নিয়মিত আইটি ফেয়ার আয়োজন করে আসছে। বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে শিল্পায়নের বিকাশে রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল ও বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল যেমন রয়েছে তেমনি আইটি পার্ক ও ইনকিউবেশন সেন্টারও রয়েছে। দেশের যুব সমাজকে প্রযুক্তি খাতে দক্ষ ও সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে এসকল সেন্টারের কার্যক্রমকে আরো কার্যকর ও গতিশীল করতে আইসিটি বিভাগের সচিব এর প্রতি অনুরোধ জানান।

এসসিআইটিপি’র সভাপতি আবদুল্লাহ ফরিদ বলেন-মেলায় শুধু পণ্য প্রদর্শন নয়। মেলাকে কার্যকরী ও আউটপুট আনতে একাডেমিয়া ইন্ডাষ্ট্রি সংযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেমিনার ও ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হচ্ছে। তিনি সকল শ্রেণি ও পেশাজীবীদের পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আইটি ফেয়ার পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।

ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর মেলায় বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন প্রধান অতিথি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। উল্লেখ্য, মেলায় ৪০টির মত প্রতিষ্ঠান প্রায় ৬০টি স্টল নিয়ে অংশগ্রহণ করছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ভারত, চীন, যুক্তরাস্ট্র, যুক্তরাজ্যভিত্তিক আইটি ও সল্যুশন বেইজড প্রতিষ্ঠান এবারের আইটি ফেয়ারে অংশগ্রহণ করছে। মেলায় প্লাটিনাম স্পন্সর হিসেবে থাকছে এফ-ফাইভ। গোল্ড স্পন্সর আই ভ্যালু, সিলভার স্পন্সর সফোস ও স্টারটেক এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিঃ, টেকনোলজি পার্টনার লিংক থ্রি, সাইবার পার্টনার বিটলস সাইবার সিকিউরিটি লি: ও ক্লাউড পার্টনার কোলোশিয়া। এছাড়া মেলা চলাকালীন প্রতিদিন ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বিভিন্ন সেমিনার আয়োজন রয়েছে। ১৮-২০ জানুয়ারি মেলা প্রতিদিন সকাল ১০.০০ থেকে রাত ৯.০০ টা পর্যন্ত চলবে।

-সংবাদ বিজ্ঞপ্তি