মাসুদ লস্কর, হবিগঞ্জ থেকে: অযত্নে অবহেলায় হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান। উদ্যানের মুল ফটক দিয়ে সামনে যেতে চোখে পড়ে সাইনবোর্ড, ‘ঝুঁকিপূর্ণ কালভার্ট,বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করুন’ শীর্ষক নির্দেশনা । কিন্তু বাস্তবে বিকল্প কোন রাস্তা নেই।
সরজমিনে দেখা গেছে , সাতটি ছড়া বেষ্টিত একটি ছড়ার উপর নির্মিত কালভার্টটি যা পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশ পথ। কিন্তু ছড়ার বালি ক্রমশ নেমে যাওয়ায় দেবে যায় এটা। ফাটল ধরে। তাছাড়া বালি সরে যাওয়ায় পাহাড় ধসের কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে সাঁওতাল পাড়ার ৪টি পরিবারের বসত ভিটা। ভুক্তভোগী পরিবারের কয়েকজন সদস্য জানান যে পাহাড় ধসে তারা গৃহহীন। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে ও কাজ না হওয়ায় পাশেই ঝুপড়ি ঘর বানিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
ইকো পার্কের সুপারভাইজার আবুল হুসেন জানান, পূর্বে কিছু সিন্ডিকেট ছড়া থেকে বালি উত্তোলন করে বিক্রি করত। বিষয়টি স্হানীয় সাংসদ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী এডভোকেট মাহবুব আলী অবগত হয়ে বালি উত্তোলন বন্ধ করতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিলে বন্ধ করা হয়। কিন্তু ছড়ার ভাটি অংশে এখনও কিছু সিন্ডিকেট গোপনে বালি উত্তোলন করে। তাতে ছড়ার ওপরের বালি সরে যাওয়ায় সেতুতে ফাটল ও ভুমি ধস হচ্ছে।
ইকো পার্কে কর্মরত আকাশ দেব বর্মন জানান, জাতীয় উদ্যানটি সরকারের রাজস্ব আয়ের অন্যতম সম্ভাব্য খাত।সঠিক পদক্ষেপ নিলেই রাজস্ব আয় বাড়বে।
বাস্তবে দেখা যায়, উদ্যানের সীমানা প্রাচীর নেই বললেই চলে। কোথাও কাঁটাতার, আবার কোথাও বাঁশের বেড়া। যা ডিঙ্গিয়ে দর্শনার্থীরা অবাধে উদ্যানে প্রবেশ করতে পারে।
বেশিরভাগ দর্শনার্থী এন্ট্রি টিকেট না কেটেই ঢুকে পড়ে। সীমানা প্রাচীর থাকলে সব দর্শনার্থী টিকেট কেটে প্রবেশ করতে বাধ্য হত। বাড়তো রাজস্ব।
অন্যদিকে, শিশুদের জন্য কিছু রাইড যোগ করলে এবং উদ্যানের ভেতর শব্দহীন কিছু বাহন চলাচলের সুবিধা করলে সমগ্র উদ্যান ঘুরে দেখতে দর্শনার্থীদের সুবিধা হতো। তাছাড়া সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে আবাসিক হোটেল বা রিসোর্ট হলে দর্শনার্থীরা উদ্যানের রাতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারতেন।
উদ্যানে কর্মরত রেঞ্জ অফিসার এর কাছে ঝুঁকিপুর্ন কালভার্ট প্রসঙ্গে জানান যে , সেখানকার সয়েল টেস্ট করার জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসলে সেতু মেরামতের কাজ শুরু হবে।