বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
আফগানিস্তানে অবিলম্বে হিংসা বন্ধ করার জন্য আবেদন জানাল ভারত, জার্মানি, কাতার, তুরস্ক ও আরও কয়েকটি দেশ। সেই সঙ্গে তারা জানিয়ে দিয়েছে, কোনও গোষ্ঠী যদি সামরিক শক্তির সাহায্যে আফগানিস্তানে ক্ষমতায় আসে, তারা স্বীকৃতি দেবে না। আফগানিস্তান নিয়ে সম্প্রতি দোহায় আন্তর্জাতিক স্তরের দু’টি বৈঠক হয়। তারপর কাতার থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘খুব দ্রুত’ আফগানিস্তানে শান্তি ফিরিয়ে আনা দরকার।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশ বলেছে, তালিবান ও আফগান সরকারের মধ্যে একটা রাজনৈতিক সমঝোতা হওয়া জরুরি। যত দ্রুত সম্ভব সেখানে সংঘর্ষ বিরতি হওয়া দরকার। দোহায় প্রথম বৈঠকটি হয় ১৯ জুলাই। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আমেরিকা, পাকিস্তান, চিন, উজবেকিস্তান, ব্রিটেন, কাতার, রাষ্ট্রপুঞ্জ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় বৈঠকটি হয় ১২ অগাস্ট। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ভারত, জার্মানি, নরওয়ে, কাতার, তাজকিস্তান, তুরস্ক, তুর্কমেনিস্তান, রাষ্ট্রপুঞ্জ ও আমেরিকার প্রতিনিধিরা। ভারতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বিদেশমন্ত্রকের পাকিস্তান-আফগানিস্তান-ইরান ডিভিশনের জয়েন্ট সেক্রেটারি জে পি সিং।
কাতারের বিদেশমন্ত্রক পরে জানায়, বৈঠকে আফগানিস্তানের হিংসা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সেখানে বহু নিরীহ মানুষ মারা যাচ্ছেন। মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে ব্যাপকভাবে। প্রতিটি প্রাদেশিক রাজধানীতে স্থলপথে ও আকাশপথে আক্রমণ চলছে।
এর পরেই কাতার জানায়, বৈঠকে উপস্থিত প্রতিটি দেশ জানিয়ে দিয়েছে, কোনও গোষ্ঠী যদি সামরিক শক্তির জোরে আফগানিস্তানে ক্ষমতায় আসে, তাহলে তারা সেই সরকারকে স্বীকৃতি দেবে না।
আফগানিস্তান থেকে পাওয়া সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, তালিবান হামলায় ছত্রভঙ্গ হয়ে গেছে আফগান সেনাবাহিনী। ১১টিরও বেশি প্রাদেশিক রাজধানী এখন তালিবানের দখলে। গোটা দেশে ৭০ শতাংশের বেশি এলাকায় তালিবান সাম্রাজ্য তৈরি হয়ে গেছে। জানা গেছে, উত্তর ও দক্ষিণ দু’দিক দিয়েই কাবুল দখলের পথে এগোচ্ছে তারা। রাজধানী কাবুল এখনও পর্যন্ত নিরাপদ থাকলেও, যেভাবে তালিবান গতি বাড়াচ্ছে, তাতে তাদের কাবুল পৌঁছে যেতে বেশি সময় লাগবে না। মাত্র ১৫০ কিলোমিটার দূরে আছে তারা কাবুল থেকে।
দিল্লি সূত্রে জানা গিয়েছে, তালিবান আধিপত্য থেকে বাঁচতে আফগানিস্তানের সরকারি আধিকারিকরাই গা ঢাকা দিতে শুরু করেছেন। অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন তাঁরা। এমন পরিস্থিতিতে কাবুল, কন্দহর, মাজার-ই-শরিফ-এর মতো শহর থেকে নিরাপত্তাবাহিনী-সহ সমস্ত আধিকারিক ও কর্মীকে দেশে ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কী ভাবে উদ্ধারকার্য চালানো হবে, তার পরিকল্পনাও তৈরি হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানে দূতাবাস এবং কনস্যুলেটগুলি পরিচালনা করা সম্ভব নয়।