বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: বাংলাদেশি ওষুধ, টেক্সটাইল, কৃষিজাত পণ্য, পাটপণ্য, পাদুকাসহ অন্যান্য পণ্যের বিপুল চাহিদা রয়েছে আফ্রিকায়। অথচ গত বছর বাংলাদেশের মোট রপ্তানির মাত্র ১ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ হয়েছে আফ্রিকার দেশগুলোয়। এ অবস্থায় উন্নয়নশীল দেশে (এলডিসি) উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে বাণিজ্য সম্প্রসারণে আফ্রিকার বাজারে পণ্য রপ্তানির পাশাপাশি সেখানে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ করতে হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্মেলনের পঞ্চম দিন গতকাল শনিবার ‘বাংলাদেশ ও আফ্রিকার মধ্যকার বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সহযোগিতা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে আলোচকরা এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বাংলাদেশের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। এই সুযোগ নিতে দেশের উদ্যোক্তাদের আরও উদ্যমী হতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ওষুধ, টেক্সটাইল, কৃষিজাত পণ্য, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, পাট ও পাটজাতপণ্য, চামড়া ও পাদুকা পণ্যেও ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আফ্রিকা অঞ্চলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে সরকারের পক্ষ থেকে নীতিসহায়তাসহ সব ধরনের সহযোগিতার আশ^াস দেন। তিনি বলেন, ‘আফ্রিকা মহাদেশে প্রচুর জমি রয়েছে, যেখানে আমাদের উদ্যোক্তারা তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করতে পারেন।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান জানান, সারা বিশে^র সঙ্গে আফ্রিকার বাণিজ্যের পরিমাণ ৮৮৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বৈশ্বিক বাণিজ্যের ৩ শতাংশ এবং গত বছর আফ্রিকার দেশগুলোর আন্তঃবাণিজ্যের পরিমাণ ১৩৩ বিলিয়ন ডলার। তিনি বলেন, আফ্রিকার বাণিজ্য প্রধানত ‘আফ্রিকান গ্রোথ অ্যান্ড অপরচুনিটি অ্যাক্ট (আগোয়া)’ এবং ‘কমন মার্কেট ফর ইস্টার্ন অ্যান্ড সাউদার্ন আফ্রিকা (কমেসা)’র মাধ্যমে বেশি মাত্রায় প্রভাবিত হয়ে থাকে। তিনি জানান, আফ্রিকায় বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি সম্প্রসারণে ইপিবি ৫টি বাণিজ্য মেলা আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। রপ্তানিকৃত পণ্যের ওপর আফ্রিকার দেশগুলোর উচ্চ শুল্ক আরোপের কারণে সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি কাক্সিক্ষত মাত্রায় উন্নীত হচ্ছে না বলে তিনি মতপ্রকাশ করেন। এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের পর আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে আরও বেশি হারে বাংলাদেশি পণ্য আফ্রিকায় রপ্তানির উদ্যোগ গ্রহণের ওপর জোরারোপ করেন ইপিবিপ্রধান।
ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার, তবে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির মাত্র ১ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ আফ্রিকার দেশগুলোয় রপ্তানি হয়ে থাকে। তিনি বলেন, আফ্রিকার দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ প্রধানত তুলা আমদানি করে এবং বর্তমানে বাংলাদেশের টেক্সটাইল, কৃষি, ফিশারিজ, বিদ্যুৎ ও টেলিযোগাযোগ খাতে আফ্রিকার বিনিয়োগ প্রায় ৩০৬ মিলিয়ন ডলার। আফ্রিকার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণে সরাসরি বিমান যোগাযোগ চালুকরণ, বাংলাদেশে আফ্রিকার দেশগুলোর দূতাবাস স্থাপন, এফটিএ ও পিটিএ স্বাক্ষরের ওপর জোরারোপ করেন তিনি।