বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: ‘আসামিরা আমার ছেলে আবরার ফাহাদ রাব্বিকে ছয় ঘণ্টা ধরে অমানবিকভাবে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করে। আমি এই হত্যাকাণ্ডর ন্যায়বিচার চাই।’ সোমবার (৫ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় এই কথা বলেন বরকত উল্লাহ।
আদালতে আবরারের বাবা দৃঢ়তার সঙ্গে মামলার এজাহারের অংশটুকু উল্লেখ করে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘বাদীর জবানবন্দি শেষ।’ এরপর আবরারের বাবা আদালতকে লক্ষ্য করে বলেন, ‘স্যার আমার আরেকটু বলার আছে?’ আদালত অনুমতি দিলে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে বিচারককে বলেন, ‘আসামিরা আমার ছেলে আবরার ফাহাদ রাব্বিকে ছয় ঘণ্টা ধরে আমানবিকভাবে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করে। আমি এই হত্যাকাণ্ডর ন্যায়বিচার চাই।’
এর আগে ১৫ সেপ্টেম্বর সব আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।
গত ১৩ জানুয়ারি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামলাটি বিচারের জন্য ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির আদেশ দেন। এরপর মহানগর দায়রা জজ আদালত দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এ পাঠানোর আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ নভেম্বর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযোগপত্রে ২৫ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জন এবং এর বাইরে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আরও ছয় জনের জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়। এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জন এবং এজাহারের বাইরে থাকা ছয় জনের মধ্যে পাঁচ জনসহ মোট ২২ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পলাতক রয়েছে তিন জন।
অভিযোগপত্রে ৬০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। ২১টি আলামত ও আটটি জব্দতালিকা আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।
এজাহারে নাম থাকা আসামিরা হলো মেহেদী হাসান রাসেল, অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মেহেদী হাসান রবিন, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুল ইসলাম, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এএসএম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদুজ্জামান জিসান ও এহতেশামুল রাব্বি তানিম।
এজাহারবহির্ভূত ছয় জন হলো ইশতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, এসএম মাহমুদ সেতু ও মোস্তবা রাফিদ।
পলাতক তিন আসামি হলো মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ। এদের মধ্যে প্রথম দুই জন এজাহারভুক্ত আসামি।