বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
ফেসবুক গ্রুপ, টেক্সট চেন কিংবা জুম কল। এসবের মাধ্যমে আমেরিকা জুড়ে পরস্পরের কাছাকাছি আসছেন কোভিড পীড়িতরা। যাঁরা কোভিড রোগ থেকে সেরে উঠেছেন কিংবা যাঁদের প্রিয়জন মারা গিয়েছেন ওই রোগে, তাঁরা সকলেই আছেন এই গ্রুপগুলিতে। সবাই মিলে চেষ্টা করছেন যাতে সরকার কোভিড সারভাইভারদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেয়। আগামী দিনে যাতে এইধরনের অতিমহামারী দেখা না দেয়, সেজন্য গবেষণায় অর্থ বরাদ্দ করে। কোভিড পীড়িত পরিবারগুলিকে নানাভাবে সাহায্য করছে ‘কোভিড সারভাইভারস ফর চেঞ্জ’ এবং ‘ইয়ং উইডোজ অ্যান্ড উইডোয়ারস অব কোভিড ১৯’ নামে গ্রুপগুলি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চান, দ্রুত কোভিড বিধি তুলে নেওয়া হোক। কিন্তু কোভিড পীড়িতদের গ্রুপগুলির দাবি, ‘নট সো ফাস্ট’। এত তাড়াতাড়ি সব খুলে দেওয়া ঠিক হবে না। সেই দাবিতে আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটনে তিনদিনের সমাবেশ করবে তারা। সেখানে অনেকে বক্তব্য পেশ করবেন। অনেকে সাজাবেন তাঁদের ছবি ও ভাস্কর্য।
এর আগেও আমেরিকায় বিভিন্ন রোগে আক্রান্তদের নিয়ে সংগঠন তৈরি হয়েছে। আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটি দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানাচ্ছে, ওই মারণরোগ নিয়ে গবেষণায় আরও বেশি অর্থ বরাদ্দ করুক সরকার। তবে আমেরিকায় আর কোনও রোগ নিয়ে কোভিড অতিমহামারীর মতো রাজনীতি হয়নি।
আমেরিকার হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে স্থির হয়েছে, প্রতি বছর ১ মার্চ দিনটিতে কোভিডে মৃতদের স্মরণ করা হবে। দাবি উঠেছে, ৯/১১-র সন্ত্রাসবাদী হামলা নিয়ে যেমন তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছিল, অতিমহামারী নিয়েও তেমন তৈরি হোক। বাইডেন এখনও এসম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেননি।
কোভিড পীড়িতদের গোষ্ঠীগুলির বেশিরভাগ সদস্য এই প্রথমবার কোনও দাবিতে পথে নামলেন। কিন্তু অভিজ্ঞরাও ওই গ্রুপগুলিতে আছেন। তাঁদের অন্যতম হলেন ক্রিস কোচার। তিনি গান সেফটি মুভমেন্টের সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত। ২০০১ সালে সন্ত্রাসবাদী হামলার পরে মৃতদের প্রিয়জনেরা দাবি তুলেছিলেন, যথাযথ তদন্ত হোক। কোভিড পীড়িতরাও অনেকে দাবি তুলেছেন, কীভাবে অতিমহামারী এত ছড়িয়ে পড়ল তা নিয়ে তদন্ত হোক। সন্ত্রাসবাদী হামলায় মারা গিয়েছিলেন ৩ হাজার মানুষ। কোভিডে মারা গিয়েছেন ৬ লক্ষের বেশি মার্কিন নাগরিক।
পর্যবেক্ষকদের মতে, ২০০১ সালের জঙ্গি হানার পরে আমেরিকা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু অতিমহামারীর সময় নানা রাজনৈতিক মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। কোভিড পীড়িতদের গ্রুপগুলি আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটনে এসে দাবি জানাবে, অতিমহামারী নিয়ে রাজনীতি বন্ধ হোক।