Home কৃষি আমের রাজধানী সাপাহারে চাই সংরক্ষণাগার

আমের রাজধানী সাপাহারে চাই সংরক্ষণাগার

সাপাহার ( নওগাঁ ) থেকে হারুনুর রশিদ: সাপাহারে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে আম উৎপাদন। সারাদেশে আমের রাজধানী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে এই উপজেলা। আম উৎপাদনে এই উপজেলার কোন জুড়ি নেই। তবে গড়ে উঠছে না আম  সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা। ভালো দাম পেতে মৌসুম ছাড়া অন্য সময় আম বিক্রি করার প্রয়াসে আম সংরক্ষণাগার স্থাপনের দাবি আমচাষীদের।

এই উপজেলার আম শুধু জনপ্রিয়তার শীর্ষেই নয়, বরং স্বাস্থ্য ও পুষ্টিগুণ বিচারে  শতভাগ এগিয়ে। তাই এই অঞ্চলের আম্রপালী জাতের আমকে ‘আমের রাজা’ বলা হয়েে থাকে।
গবেষণার তথ্য বলছে, ল্যাংড়া, ফজলি, ক্ষীরশাপাত, হিমসাগর আর আম্রপালির মতো প্রায় ৮’শ জাতের আমের সন্ধান মিলেছে। আম্রপালি জাতের আম উৎপাদনে দেশ সেরা সাপাহার উপজেলা।  আবহাওয়া ও জলবায়ু অনুকূলে থাকায় বিগত কয়েক বছর ধরে রসালো এই ফলের উৎপাদন ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় বরাবরই অতৃপ্তিতে ভোগেন আম চাষিরা। তাই সময় মতো ভালো দাম পেতে সরকারিভাবে হিমাগার স্থাপনের জোর দাবি আম চাষিদের।
আমচাষিরা জানান, আমের দাম ভালো পাওয়া যায় মওসুমের প্রথম আর শেষ সময়ে। কিন্তু মধ্যেবর্তী সময়ে আমের বাজার পড়ে যায়। দেশের সর্ববৃহৎ আমের বাজার বসে এই উপজেলায়।  ধামইরহাট, পত্নীতলা, পোরশা এমনকি এক সময়ের আমের রাজধানী চাঁপাইনবাগঞ্জের আমচাষীরা আম বেচতে  আসেন এই বাজারে।  একই সময়ে অধিক পরিমাণ আম বাজারে আসার ফলে দর কমে যায়। সাপাহারে একটি হিমাগার স্থাপন করা হয় তাহলে আম সংরক্ষণ করা যেতে পারে। যা পরবর্তী সময়ে বিক্রি করলে অধিক লাভ হবে।
স্থানীয় আমচাষী আনোয়ার হোসেন বলেন, আম একটি পচনশীল ফল। প্রাথমিক অবস্থায় ক্ষীরসাপাত, গোপালভোগ এসব জাতের আম বিক্রি করা হয় পাঁচশ’ থেকে নয়শো টাকা পর্যন্ত। যদি আম সংরক্ষণের জন্য একটি হিমাগার থাকতো তাহলে আমরা কিছু সময় পরে বিক্রি করতে পারলে লাভের আশা থাকতো।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী চলতি বছরে এই উপজেলায় প্রায় দশ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। আমের ফলনও ভালো হতে পারে। এই উপজেলায় একটি আম সংরক্ষণাগার থাকলে কৃষকেরা আম সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে বিক্রি করলে অধিক লাভবান হতে পারেন। সে সাথে আম সংরক্ষণাগার স্থাপনের দাবির সাথে সহমত জানান উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্যাহ আল মামুন বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে আম সংরক্ষণাগারের বিষয়ে আলোচনা করেছি। জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সাংসদ ও খাদ্যমন্ত্রীর সাথে কথা বলে শীঘ্রই আম সংরক্ষণাগার স্থাপনের চেষ্টা করবো।”
স্থানীয়রা বলেছেন, উন্নত জাতের আমের ফলন বাড়ানোর পাশাপাশি এর সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে, অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করে, প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করা সম্ভব।