Home কৃষি আম উৎপাদনে নীরব বিপ্লব নওগাঁয়

আম উৎপাদনে নীরব বিপ্লব নওগাঁয়

এনায়েত করিম, নওগাঁ থেকে: মাত্র এক যুগের ব্যবধানে আম উৎপাদনে নীরব বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেছে নওগাঁ জেলা । কৃষিজমিতে ধানের সঙ্গে আম চাষ করেই দেশের প্রধান দুই আম উৎপাদনকারী জেলা রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জকে পেছনে ফেলে উৎপাদনের শীর্ষে পৌঁছেছে নওগাঁ।

কৃষি বিভাগের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ‘আমের রাজধানী রাজশাহী না চাঁপাইনবাবগঞ্জ’- এ নিয়ে বিতর্ক চললেও গত কয়েক মৌসুমে ওই দুই জেলায় আমের চাষ কখনো বেড়েছে, কখনো কমেছে। তবে গত এক যুগ ধরে স্থিতিশীল হারে বেড়েছে নওগাঁর আমের উৎপাদন। যদিও চাঁপাইনবাবগঞ্জের চেয়েও নওগাঁয় আমবাগান কম। তবে রাজশাহীর চেয়ে বেশি বাগান আছে সেখানে।

রাজশাহী আঞ্চলিক কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় জানায়, চলতি মৌসুমের মোট উৎপাদনের হিসাব এখনো হয়নি। তবে ২০২১-২২ মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩ লাখ ১৩ হাজার ৭৩৬ টন ও রাজশাহীতে ২ লাখ ৬ হাজার ১৫৬ টন আম উৎপাদিত হয়। এ দুই জেলাকে ছাড়িয়ে নওগাঁয় উৎপাদন হয় ৩ লাখ ৭০ হাজার টন আম। ওই মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৭ হাজার ১৬৫ হেক্টর, রাজশাহীতে ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর ও নওগাঁয় ২৯ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমিতে আমবাগান ছিল।

চলতি বছর রাজশাহীতে ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৭ হাজার ৫৮৮ ও নওগাঁয় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আমবাগান আছে। এবার চাঁপাইয়ে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সর্বোচ্চ ৪ লাখ ৩৫ হাজার ৮৪৩ টন, রাজশাহীতে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫০ এবং নওগাঁয় ৩ লাখ ৭৮ হাজার টন।

রাজশাহী ও চাঁপাইয়ের আমগাছগুলো পুরোনো হওয়ায় উৎপাদনক্ষমতা আগের মতো নেই। বিপরীতে জমির পরিমাণ কম হলেও নতুন বাগানে গাছের সংখ্যা বেশি নওগাঁয়। ফলে এই জেলা এবারও উৎপাদনে এগিয়ে থাকবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

২০১৫-১৬ মৌসুমে রাজশাহীতে প্রতি হেক্টরে গড় ফলন ছিল ১০ দশমিক ৬৮ টন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৯ দশমিক ৮১ টন। ওই বছর নওগাঁয় ফলন ছিল ১২ দশমিক ৫২ টন। ধারাবাহিকতা ধরে রেখে ২০২১-২২ মৌসুমেও গড় উৎপাদনে শীর্ষে অবস্থান করে নওগাঁ। রাজশাহীর ১১ দশমিক ১৩, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১০ দশমিক ৬৭ টনের বিপরীতে নওগাঁয় উৎপাদিত হয় ১২ দশমিক ৫৫ টন।

রাজশাহী বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক শামছুল ওয়াদুদ বলেন, নওগাঁয় পরিকল্পিতভাবে উন্নত জাতের আমগাছের বাগান করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে তিন জেলায় প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকার আমের বাণিজ্য হতে পারে। এর মধ্যে নওগাঁ জেলা একাই দুই হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে।