মোঃ আব্দুল্লাহ হক, চুয়াডাঙ্গা থেকে : আলমডাঙ্গায় নিখোঁজের ৫দিন পর ভাংবাড়িয়া গ্রামে নদী থেকে পপি খাতুন নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ভাংবাড়িয়া গ্রামের ফেরিঘাট এলাকার একটি নদী থেকে তার ভাসমান অর্ধগলিত মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
গত বুধবার রাতে স্বামীর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন পপি খাতুন। তিনি একই উপজেলার পার্শ্ববর্তী নগরবোয়ালিয়া গ্রামের তুহিন আলীর স্ত্রী। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালমর্গে পাঠানো হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, ওই গৃহবধূকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এরপর তার লাশ নদীতে ফেলে রাখা হতে পারে। তার গলায় দাগ রয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে স্বামী তুহিন আলী ও প্রতিবেশী আরও এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
জানা গেছে, প্রায় ১২ বছর আগে আলমডাঙ্গার নগরবোয়ালিয়া গ্রামের হালকা বুদ্ধিসম্পন্ন যুবক তুহিন আলীর (৩২) সাথে একই উপজেলার বেলগাছি গ্রামের নূর ইসলাম ভোলার মেয়ে পপি খাতুনের (২৬) বিয়ে হয়। তাদের এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
গত ১৯ জানুয়ারি বুধবার রাতে ঘুম ভেঙে গেলে তুহিন আলী তার স্ত্রী পপি খাতুনকে খুঁজে পাননি। তারপর থেকে গৃহবধূ পপি নিখোঁজ ছিলেন। ৬দিন পর বাড়ি থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে নিজ গ্রামের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত মাথাভাঙ্গা নদীর পানিতে লাশ ভাসতে দেখা যায়। গ্রামবাসী এ ঘটনা পুলিশকে জানালে পুলিশ বিকেলে নদী থেকে লাশ উদ্ধার করে।
লাশ উদ্ধারের পর শিশুকন্যা মিম তার মায়ের লাশ শনাক্ত করে। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে স্বামী তুহিন আলী ও তার ব্যবসায়িক পার্টনার প্রতিবেশি যুবক ঝন্টু আলীকে আটক করেছে।
নিহত পপি খাতুনের বাবা নেকবার ভোলা জানান, ‘১২ বছর আগে হালসা গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে তুহিন আলীর সাথে আমার মেয়ের বিয়ে হয়। মূলত ছোটবেলা থেকে তুহিন তার নানা মুনসার আলীর বাড়ি নগরবোয়ালিয়া গ্রামে বসবাস করছে। বেশ কয়েক বছর আগে তুহিন মাদকাসক্ত হয়। এ নিয়ে প্রায়ই তাদের সংসারে কলহ হতো। সম্প্রতি বিদেশ যাওয়ার জন্য আমাদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা চায় তুহিন। আমরা গরিব মানুষ। টাকা দিতে না পারায় আমার মেয়েকে সে মারধর শুরু করে। মানসিক অত্যাচার করে।’
আলমডাঙ্গা থানার ওসি (তদন্ত) তুহিনুজ্জামান জানান, গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এমন সন্দেহ করার ভিত্তি রয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আলমডাঙ্গা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, ‘বিকেলে নদীতে এক নারীর মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ওই নারী পপি খাতুন বলে শনাক্ত করে তার মেয়ে মিম খাতুন। আপাতত নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হচ্ছে। এরই মধ্যে অভিযুক্ত স্বামী তুহিনকে আটক করা হয়েছে।