বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ে আহমদিয়া মুসলিম জামাতের সালানা জলসা বন্ধ এবং তাদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ এবং তাদের বাড়িঘর-দোকানে ভাঙচুর করে আগুন হয়েছে। এ সময় পুলিশের সাথে বিক্ষুব্ধ জনতার ব্যাপক সংঘর্ষে একজন নিহত এবং পুলিশ-সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে।
তৌহিদী জনতার ব্যানারে আহমদনগরে আহমিয়াদের কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর করে আগুন দেয়া হয়েছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আহমদনগরে জনতার সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছিল।
এ ছাড়া করতোয়া নদীর পাড়ে ট্রাফিক পুলিশ অফিস ভাঙচুর করে আগুন দেওয়া হয়। এ সময় ৭টি মোটর সাইকেল পোড়ানো হয়। একই সময় ধাক্কামারা গোল চক্করে পুলিশ বক্স ভাঙচুর করে আগুন দেওয়া হয়। সেখানেও কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর চলে। পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় তারা।
পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় জেলা শহরের মসজিদ পাড়া গ্রামের আরিফ (২৭) নামের এক যুবক মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ভাঙচুর ও আগুনের ছবি তুলতে দিয়ে এসএ টিভির প্রতিনিধি কামরুজ্জামান টুটুল বিক্ষুব্ধ জনতার মারপিটের শিকার হন। আরও কয়েকজন সাংবাদিককে ছবি তুলতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন । এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতা জেলা শহরের অদুরে আহাম্মদনগর গ্রামে আহমদিয়াদের জলসা অভিমুখে মিছিল নিয়ে রওয়ানা দিলে চৌরঙ্গি মোড় এলাকায় পুলিশ মিছিলটিকে আটকে দেয়।
সেখান থেকে মুসুল্লিরা জেলা শহরে সিনেমা হল সড়কে পিছু হটে। বিকেলে করতোয়া নদী হেঁটে ও নৌকায় পার হয়ে উশৃঙ্খল জনতা আহমদনগরে প্রবেশ করে আহমদিয়াদের ১২-১৫টি বাড়িঘর ভাঙচুর করে এবং আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এ সময় তাদের হামলায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের কয়েকজন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিক্ষুব্ধ মুসল্লিদের দাবি আহমদিয়া মুসলিম জামাতের অনুসারীরা গোলাম আহম্মদকে নবী মনে করে তাই তারা কাফের। ইসলামের নামে তাদের কোনো জলসা ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা মেনে নিতে পারেন না। সে কারণে তাদের জলসা বন্ধে প্রশাসনকে ভূমিকা নিতে হবে।
এদিকে এর আগে বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) পঞ্চগড়ে আহমদিয়া মুসলিম জামাতকে নিষিদ্ধ ও শুক্রবার তাদের বার্ষিক সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কে সাড়ে ৪ ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে সর্বস্তরের তৌহিদী জনতা।
প্রসঙ্গত, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও পঞ্চগড়ের ফুলতলায় আহম্মদ নগরে ৩ দিনব্যাপী বার্ষিক সালানা জলসার আয়োজন করে আহমদিয়া মুসলিম জামাত। আর পঞ্চগড়ে তৌহিদী জনতার ব্যানারে স্থানীয় মুসল্লিরা তা প্রহিতের চেষ্টা করে। ফলে উভয় পক্ষের পাল্টা পাল্টি অবস্থানের কারণে সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা বলেছেন, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশের পাশাপশি বিজিবি-র্যাব এর টহল অব্যাহত রয়েছে। তবে কোনো প্রাণহানির ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য পুলিশসহ প্রশাসন তৎপর রয়েছে।