বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
চেন্নাইয়ে প্রথম টেস্টে ভারতের হারের পর অনেকেই ভেবেছিলেন সিরিজ জিতে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে যাওয়া হয়তো কঠিন হবে বিরাটদের। কিন্তু পরের তিন টেস্টে এক দুরন্ত প্রত্যাবর্তনের সাক্ষী থাকলেন সবাই। প্রথমে চেন্নাইয়ের দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডকে ৩১৭ রানে হারানো। তারপরে আহমেদাবাদের মোতেরায় তৃতীয় টেস্টে ১০ উইকেটে জয়। আর শেষ টেস্টে মোতেরাতেই ইনিংস ও ২৫ রানে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে লর্ডসে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে জায়গা করে নিলেন কোহলিরা।
গোটা সিরিজে অপ্রতিরোধ্য ভারতের দুই স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও অক্ষর পটেল। একদিকে অশ্বিন যেখানে ৩২ উইকেট নিলেন সেখনে অক্ষরের দখলে গেল ২৭ উইকেট। আর এই দু’জনের সামনে বারবার মুখ থুবড়ে পড়ল রুটবাহিনী। একটা পরিসংখ্যানেই সেটা স্পষ্ট। চেন্নাইয়ে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫০০-র বেশি রান করার পরে শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২০৫ ছাড়া বাকি ছয় ইনিংসে ২০০ করতে পারেনি ইংল্যান্ড।
মোতেরায় তৃতীয় দিনের শুরুতে দুরন্ত ব্যাট করলেন ভারতের দুই ওপেনার ওয়াশিংটন সুন্দর ও অক্ষর পটেল। অক্ষর ৪৩ করে রানআউট হন। অন্যদিকে ৯৬ করে অপরাজিত থাকলেন সুন্দর। অপর প্রান্তে এক ওভারে ইশান্ত শর্মা ও মহম্মদ সিরাজ আউট হয়ে যাওয়ায় টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরি হল না তাঁর। ৩৬৫ রানে ভারত অলআউট হওয়ায় ১৬০ রানের বিশাল লিড পায় ভারত।
পিচ দেখে মনে হচ্ছিল দ্বিতীয় ইনিংসে অন্তত কিছুটা ব্যাট করতে পারবে ইংল্যান্ড। কিন্তু কোথায় কী? তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইন আপ। পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলেই জ্যাক ক্রলিকে ফেরালেন অশ্বিন। পরের বলেই বেয়ারস্ট তাঁর শিকার হন। ডমিনিক সিবলিকে আউট করে নিজের খাতা খোলেন অক্ষর। স্টোকসও তাঁর শিকার হন। চারজনের কেউই দুই অঙ্কের সংখ্যায় যেতে পারেনি।
রুট ইনিংস ধরার চেষ্টা করেন। সঙ্গে ছিলেন ওলি পোপ। একটা পার্টনারশিপ গড়ে ওঠে। কিন্তু ৩০ রানের মাথায় রুটকে এলবিডব্লিউ করে ইংল্যান্ডের শেষ আসাও শেষ করে দেন অশ্বিন। প্রথম ইনিংসে ভাল খেলা ড্যানিয়েল লরেন্স দ্বিতীয় ইনিংসেও ভাল খেললেন। তিনিই একমাত্র ইংলিশ ব্যাটসম্যান যিনি দুই স্পিনারকে ভাল সামলালেন।
লরেন্সের সঙ্গে পোপ ও ফোকস কিছুটা ধরার চেষ্টা করলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। রান পাননি ডমিনিক বেসও। তিনজনকেই আউট করেন অক্ষর। চলতি সিরিজে চারবার পাঁচ উইকেট নিলেন তিনি। ভারতের হয়ে অভিষেক সিরিজে সবথেকে বেশি উইকেট শিকারি হলেন অক্ষর।
লরেন্স হাফসেঞ্চুরি করলেও বাকিরা কেউ দাঁড়াতে পারেননি। ১৩৫ রানে শেষ হয়ে যায় ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস। তার ফলে ইনিংস ও ২৫ রানে ম্যাচ জেতে ভারত। ভারতের হয়ে অক্ষর ও অশ্বিন ৫টি করে উইকেট নেন। তৃতীয় দিনেই শেষ হয়ে গেল আরও একটা টেস্ট।
সিরিজ জিতে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে গেল ভারত। জুলাইয়ে লর্ডসে কেন উইলিয়ামসনের নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বের সেরা টেস্ট দল হওয়ার লড়াইয়ে নামবেন কোহলিরা।