Home পরিবেশ কুড়িগ্রামে অবৈধ ইটভাটার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও চিমনি গুঁড়িয়ে দেয়া হচ্ছে

কুড়িগ্রামে অবৈধ ইটভাটার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও চিমনি গুঁড়িয়ে দেয়া হচ্ছে

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান। ছবি সংগৃহীত

নয়ন দাস, কুড়িগ্রাম: পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক জেলার বিভিন্ন স্থানে বন্ধ করে দেয়া ইটভাটার মধ্যে অধিকাংশই আবার কার্যক্রম শুরু করেছে। এগুলোর বিরুদ্ধে আবারও অভিযান শুরু হয়েছে। এবার চিমনি গুঁড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।

পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মওসুমে বিভিন্ন স্থানে ১০৮ টি ইটভাটায় কার্যক্রম শুরু হয়। এগুলোর মধ্যে ৭২ টি ভাটা অবৈধ।  ২০১৩ সালের পরিবেশ আইন অনুযায়ী জেলার অধিকাংশ ইটভাটাকে পরিবেশের ছাড়পত্র প্রদান না করায় এগুলোকে অবৈধ ভাটা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন অনুমতি ছাড়া এসব ভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়মিত অভিযানে ৪১ টি ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। সেগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়।

সরেজমিনে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বন্ধ করে দেয়া ভাটাসমূহের বেশিরভাগ আবারও ইট পোড়ানো শুরু করেছে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনরূপ তোয়াক্কা না করে।

জানায়, চলতি মৌসুমে কুড়িগ্রামে ১০৮টি ইটভাটায় ইট পোড়ানো শুরু হয়। এসব ভাটার মধ্যে ৭২টি অবৈধ। গত ১ মার্চ পর্যন্ত চলতি মৌসুমে জেলায় ৬১টি ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এর মধ্যে ৪১টি অবৈধ ভাটার কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে পরবর্তী সময়ে এসব ইটভাটার বেশির ভাগই চালু করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক রেজাউল করিম জানিয়েছেন, বন্ধ করে অবৈধ ইটভাটাগুলো আবারও কার্যক্রম শুরু করার বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে। কঠোর ব্যবস্থা নিতে এগুলোর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। এবার এগুলোর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া এবং চিমনি গুঁড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। শুক্রবার জেলার ফুলবাড়ী উপজেলায় এবং শনিবার নাগেশ্বরী উপজেলায় অভিযান চালিয়ে দুটি অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ফুলবাড়ী উপজেলার খড়িবাড়িতে অবস্থিত মেসার্স এমএবি ব্রিকস নামক ইটভাটার চিমনি সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়াও ভাটার আগুন নিভিয়ে ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।

একইভাবে শনিবার ভ্রাম্যমাণ আদালত জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নে মেসার্স এসএস ফোর নামে ইটভাটার চিমনি গুঁড়িয়ে দেন।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জেলা পরিবেশ অধিদফতর, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, অবৈধ ইটভাটায় প্রশাসনের অভিযানের প্রতিবাদ এবং এসব ইটভাটা চালু রাখার দাবিতে  গত রবিবার মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে ইট প্রস্তুতকারী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। সেই সঙ্গে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে তারা। বিভিন্ন ইটভাটার মালিক–শ্রমিক মিলে পাঁচ শতাধিক মানুষ কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে সমাবেশ ও মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।