চট্টগ্রাম:কবি কলামিষ্ট ও আলোড়ন সৃষ্টিকারী রাজনীতিবিদ ইদরিস আলম ১৯৪৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের দক্ষিণ বাকলিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। প্রাইমারিতে অধ্যায়নরত অবস্থায় সক্রিয় রাজনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েন।
তার রাজনৈতিক জীবন খুবই বর্ণিল। তিনি ছিলেন ষাট এর দশকের তুখোড় ছাত্রনেত। চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও কিংবদন্তি নেতা জহুর আহমেদ চৌধুরীর হাত ধরে তিনি রাজনীতিতে পদার্পণ করেন। ইদ্রিস আলম কে নিজের ছেলের মত স্নেহ করতেন জহুর আহমেদ চৌধুরী।
স্বাধীনতা সংগ্রামের উত্তাল দিনগুলির সাক্ষী ছিলেন ইদরিস আলম। ওই সময় ঘটনাবহুল চট্টগ্রামের প্রতিটি আন্দোলনের পরতে পরতে জড়িয়ে ছিলেন ইদ্রিস আলম। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর খুবই কাছের মানুষ। তাকে দেওয়া বঙ্গবন্ধুর চিঠি ও দুর্লভ ছবি রক্ষিত আছে তার নিজস্ব লাইব্রেরীতে। রাজনৈতিক মেঠোপথে তিনি সুবক্তা হিসেবে খ্যাত ছিলেন। অনলবর্ষী বক্তা হিসেবে চাটগাঁয় তিনি ছিলেন অদ্বিতীয়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তাকে দীর্ঘদিন কারাবরণ করতে হয়েছিল। এর আগে তিনি একাধারে সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সিটি আওয়ামী লীগের (ছাত্র অবস্থায়) দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক এবং স্বাধীনতা উত্তর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। বহুমাত্রিক জ্ঞান অন্বেষণ ব্যাপৃত ছিলেন ইদরিস আলম। নিত্য সঙ্গী বইয়ের জগতে বুঁদ হয়ে থাকতেন বেশিরভাগ সময়। পাশাপাশি তিনি নিয়মিত কলাম লিখতেন চট্টগ্রামের জনপ্রিয় পত্রিকাগুলোতে। চট্টগ্রাম নগরীর সবচেয়ে অবহেলিত অনুন্নত ও শিক্ষাবিমুখ এলাকা ছিল বৃহত্তর বাকুলিয়া। এলাকাটিতে শিক্ষার আলো জ্বালানোর লক্ষে তিনি স্বাধীনতা উত্তর সময়ে চর চাক্তাই প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর চাক্তাই বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এবং পরবর্তীতে ইউসেপ স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। সদা হাস্যোজ্জল, অমায়িক, উদার, স্পষ্টভাষী, অসাম্প্রদায়িক, মানবতাবাদী ও প্রগতিশীল ঘরানার মানুষটি ৬ নভেম্বর ২০০৬ সালে মাত্র ৬৩ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন।
-সংবাদ বিজ্ঞপ্তি