বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: গোপালগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় ঐ শিক্ষার্থীকে তুলে নিযে গণধর্ষণ করা হয়।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, ঘটনায় জড়িত ৬ জনকে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এরা হলেন, রাকিব মিয়া ওরফে ইমন (২২), পিয়াস ফকির (২৬), প্রদীপ বিশ্বাস (২৪), নাহিদ রায়হান (২৪), মো. হেলাল (২৪), তূর্য মোহন্ত (২৬)।
র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৮ শুক্রবার তাদেরকে গ্রেপ্তার করে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জড়িতরা পেশাদার অপরাধী। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে নানা অপরাধে জড়িত থাকায় একাধিক মামলা রয়েছে। তবে তাদের কোন রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা মেলেনি র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা গণধর্ষণের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা বিষয়ে তথ্য প্রদান করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, মূলত রাকিবের নেতৃত্বে স্থানীয় একটি অপরাধ চক্রের সদস্য। তারা সকলেই গোপালগঞ্জ ও তার আশপাশের এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। গ্রেপ্তার তূর্য মোহন্ত ব্যতীত তারা প্রায় ৮/১০ বছর যাবত নবীনবাগ এলাকায় বিভিন্ন স্থানে মাদক সেবন, আড্ডা, জুয়াসহ বিভিন্ন ধরণের অপকর্মে লিপ্ত ছিল। এছাড়াও তারা চুরি ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধেও জড়িত। রাস্তাঘাটে স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করতো । তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলাও রয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে গ্রেপ্তাররা ইজিবাইক দিয়ে নবীনবাগ হেলিপ্যাড সংলগ্ন এলাকায় যাওয়ার পথে ভুক্তভোগীকে তার বন্ধুসহ দেখে ইজিবাইক থামিয়ে তাদেরকে নাম পরিচয় জিজ্ঞাসা করে এবং বিভিন্ন ধরনের অশালীন মন্তব্য ও ইভটিজিং করতে থাকে। এনিয়ে প্রতিবাদ করায় তাদের সঙ্গে ভিকটিম এবং তার বন্ধুর বাকবিতন্ডা হয়। পরবর্তীতে তাদেরকে জোরপূর্বক ঘটনাস্থলের পাশে ঢালু জায়গায় নিয়ে যেতে চাইলে ভুক্তভোগীর বন্ধু বাধা দেয়ায় গ্রেপ্তাররা তাকে মারধর করে। গ্রেপ্তাররা ভিকটিমকে স্থানীয় একটি ভবনে নিয়ে গিয়ে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে।
গ্রেপ্তার রাকিব মিয়া ওরফে ইমন স্থানীয় একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল ও আলিম সম্পন্ন করে। সে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে রিসেপশনিস্ট হিসেবে চাকুরি করে। ইতোপূর্বে তার বিরুদ্ধে মাদক ও মারামারির মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
গ্রেপ্তার পিয়াস ফকির গোপালঞ্জের একটি পাওয়ার হাউজে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করে। গ্রেপ্তার প্রদীপ বিশ্বাস স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যয়ন করেছে। সে গোপালগঞ্জে হোম সার্ভিসের মাধ্যমে এসি ও ফ্রিজ মেরামতের কাজ করে।
গ্রেপ্তার নাহিদ রায়হান স্থানীয় একটি কলেজে স্নাতক ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত। গ্রেপ্তার হেলাল স্থানীয় একটি কলেজে স্নাতক ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত। সে একটি মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউশন সেলস অফিসার হিসেবে চাকুরি করতো।
গ্রেপ্তার তূর্য মোহন্ত খুলনার একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ২০১৮ সালে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করে। পরবর্তীতে সে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে অধ্যয়নের জন্য বিদেশ গমন করে। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ শেষ বর্ষে থাকাকালীন কোভিড পরিস্থিতির কারণে সে দেশে চলে আসে এবং গোপালগঞ্জে সদরে গার্মেন্টস পণ্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করে বলে জানা যায়। গ্রেপ্তার তূর্যের বিরুদ্ধে একটি মারামারির মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।