বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক
ইমরান খান সরকারের মেয়াদ আর বেশি নেই। তাঁর গদিচ্যূত হওয়া এখন কেবল সময়ের ব্যাপার। এখন পর্যন্ত যা পরিস্থিতি তাতে অনাস্থা ভোটে ইমরান সরকারের পতন অনিবার্য। কারণ, বিরোধী জোটের কাছে সংখ্যাগরিষ্ঠ সাংসদদের সমর্থন রয়েছে। তা ছাড়া ইমরানের দল তেহরিক ই ইনসাফের ২০ জন সাংসদও তাঁর বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারেন বা ভোট দানে বিরত থাকতে পারেন।
পর্যবেক্ষকদের মতে, ক্ষমতাহারা হলেও রাজনীতিতে টিকে থাকার আগ্রহ রয়েছে তাঁর। তাই সহানুভূতি পাওয়ারও চেষ্টা করছেন। তবে ফলে ইমরান ইস্তফা দিলেন না। অনেকেই মনে করছিলেন, রবিবার পাক সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটির আগেই বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেবেন ইমরান। কিন্তু সে পথে হাঁটলেন না প্রাক্তন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার। বরং এদিন রাতে জাতির উদ্দেশে তাঁর নাতিদীর্ঘ বক্তৃতায় ইমরান জানিয়ে দিলেন, শেষ পর্যন্ত তিনি উইকেটে থাকবেন। বিনা লড়াইয়ে ময়দান ছাড়বেন না।
একই সঙ্গে তিনি এও বোঝাতে চাইলেন, তাঁকে ইসলামাবাদের তখত থেকে সরানোর জন্য বিদেশি শক্তির ষড়যন্ত্র রয়েছে। সেই শক্তি আর কেউ নয়, আমেরিকা। তারা পাকিস্তানের তিন দালালের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরাতে উঠে পড়ে লেগেছে। এবং এই চক্রান্তে বড় রকমের টাকার খেলা রয়েছে বলেও এদিন সরাসরি অভিযোগ করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী।
তবে ম্যাচ যে তাঁর হাত থেকে বেরিয়ে গিয়েছে, এদিন ইমরানের গোটা বক্তৃতার সারমর্ম থেকেই তা পরিষ্কার। বক্তৃতার শুরুতেই তিনি বলেছেন, তাঁর হারানোর কিছু নেই। আল্লাহর আশীর্বাদে তাঁর কাছে ধন দৌলত সব রয়েছে। শুধু ক্ষমতার জন্য তিনি রাজনীতিতে নামেননি। বরং তাঁর অগ্রাধিকার হল, দেশকে গোলামির হাত উদ্ধার করা। তাঁর কথায়,পাকিস্তান গঠনের পর থেকেই কয়েকটি পরিবার দেশকে লুটেপুটে নিয়েছে। নওয়াজ শরিফের ১৮ টি কারখানা ছিল। সরকার থেকে ঋণ নিয়ে সেই কারখানা করে তার পর বিলেতে পালিয়ে গিয়েছিলেন। আর পালানোর আগে ঋণ মাফ করিয়ে নিয়েছিলেন। সেই ‘অপশাসনের’ অধ্যায়ের নিরিখে প্রধানমন্ত্রী পদে তাঁর গত সাড়ে তিন বছরের মেয়াদ যে কত উজ্জ্বল তা এদিন বোঝানোর চেষ্টা করেছেন ইমরান। আল্লাহর দোহাই দিয়েছেন। ধর্মীয় ভাবাবেগ জাগিয়ে তুলতে চেয়েছেন দেশবাসীর মধ্যে। সেই সঙ্গে গদি ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে তথা দেশের বিরুদ্ধে যাঁরা গদ্দারি করছেন, তাঁদের চিনে নিতে হবে। তাঁদের সবক শেখাতে হবে।
কূটনৈতিক সূত্রে বলা হচ্ছে, কদিন আগে ডিপ্লোম্যাটিক কেবলে ফাঁস হয়েছিল যে আমেরিকা পাকিস্তানের তখত থেকে ইমরানকে সরাতে চায়। সেই কেবলের কথাই এদিন ইমরান বোঝাতে চেয়েছেন।