বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক:
২০৬০ সাল নাগাদ (আগামী ৩৫ বছরে) খ্রিস্টধর্মকে সরিয়ে, ইসলাম বিশ্বের বৃহত্তম ধর্ম হিসেবে স্থান করে নেবে। এই সময়কালে বিশ্বব্যাপী মুসলিম জনসংখ্যা ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। ২০৬০ সালের মধ্যে মুসলমান জনসংখ্যা ৩ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে। পিউ রিসার্চ সেন্টারের একটি নতুন গবেষণায় এমনই ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে।
বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল ধর্মগুলির উপর গবেষণা চালায় পিউ রিসার্চ। সেই গবেষণা অনুসারে, বর্তমানে খ্রিস্টধর্মের মানুষ এই পৃথিবীতে সর্বাধিক। দুনিয়ার ৭.৩ বিলিয়ন জনসংখ্যার ৩১ শতাংশ খ্রিষ্টান। তার পরেই রয়েছে ইসলাম দ্বিতীয় স্থানে। হিন্দুধর্ম তৃতীয় স্থানে রয়েছে। তবে, আগামী সাড়ে তিন দশক ধরে এই অবস্থার নাটকীয় বদল ঘটবে। কারণ মুসলিম জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা ইসলামকে বিশ্বব্যাপী প্রধান ধর্মে পরিণত করবে বলে পিউ রিসার্চের রিপোর্টে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে।

পিউ রিসার্চের মতে, বর্তমানে ইসলাম বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল ধর্ম এবং এই প্রবণতা ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী থাকবে। যার ফলে ২০৬০ সাল নাগাদ মুসলিমরা বিশ্বের বৃহত্তম ধর্মীয় গোষ্ঠীতে পরিণত হবে। গবেষণায় মুসলিমদের আধিপত্য বৃদ্ধির তিনটি প্রধান কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। যেগুলি হল- তরুণ জনসংখ্যা, উচ্চ প্রজনন হার এবং ধর্মান্তরিত হওয়ার প্রবণতা।
গবেষণা অনুসারে, ২০৬০ সাল নাগাদ বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা প্রায় ৩২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই বৃদ্ধির মধ্যে মুসলিম জনসংখ্যা ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে, যা বিশ্বব্যাপী গড়ের দ্বিগুণেরও বেশি।
পিউ রিসার্চের গবেষণায় ২০১৫ থেকে ২০৬০ সালের মধ্যে ৪৫ বছরের জন্য বিভিন্ন ধর্মের জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে গবেষণা হয়েছিল। দেখা যাচ্ছে যে, ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাপী মুসলিম জনসংখ্যা ছিল ১.৮ বিলিয়ন। যা ২০৬০ সাল নাগাদ তিন বিলিয়ন অতিক্রম করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মুসলিম জনসংখ্যা কেন দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে?
সমীক্ষা অনুসারে, মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কারণ দায়ী। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- তরুণ জনসংখ্যা এবং উচ্চ প্রজনন হার। গবেষণা রিপোর্ অনুসারে, মুসলিম মহিলাদের প্রজনন হার ৩.১। খ্রিস্টান মহিলাদের ২.৭।
উন্নয়নশীল দেশগুলিতে, মুসলিম এবং খ্রিস্টানদের প্রজনন হার খুব বেশি এবং মৃত্যুহার কম। সেই কারণে তাদের জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সাব-সাহারান আফ্রিকার মতো অঞ্চলে ২০৫০ সালের মধ্যে ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পিউ রিসার্চ সেন্টার প্রকাশিত ২০১০ সালের রিপোর্টে উল্লেখ ছিল যে, বিশ্বের মুসলিম জনসংখ্যার ৩৪ শতাংশের বয়স ১৫ বছরের কম, ৬০ শতাংশের বয়স ১৫ থেকে ৫৯ বছরের মধ্যে এবং মাত্র ৭ শতাংশের বয়স ৬০ বছর বা তার বেশি। বেশিরভাগ মুসলিম, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যে বাস করে, যেখানে বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ।