Home Second Lead বিক্ষোভে অচল ইয়াঙ্গুন

বিক্ষোভে অচল ইয়াঙ্গুন

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

মিয়ানমারের প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনের রাস্তাঘাট বন্ধ করে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। লক্ষাধিক বিক্ষোভকারী এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।

বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক মাধ্যমে সড়ক অবরোধের আহ্বান জানিয়ে সকাল থেকে সড়ক অবরোধ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। তাদের লক্ষ্য সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাতে কাজে যোগ দিতে না পারেন এবং নিরাপত্তা বাহিনীর দমনপীড়নের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া।

রোড ব্লকিং ডে’র বেশ কিছু ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এসময় বিক্ষোভকারীদের বিভিন্ন দাবি এবং স্লোগান সম্বলিত ব্যানার, ফেস্টুন হাতে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়। গাড়ি দিয়ে সড়ক অবরোধ এবং বিক্ষোভকারীদের সরব উপস্থিতির কারণে শহরতলীতে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

মিয়ানমারে জাতিসংঘের বিশেষদূত সম্ভাব্য সংঘাতের বিষয়ে সতর্ক করেছেন। ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর আটক নির্বাচিত নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করছেন মিয়ানমারের সাধারণ জনগণ।

অং সান সু চি সহ আরও বেশক কয়েকজন নেতা তাদের সামরিক বাহিনীর হাতে আটক আছেন।

মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সূ চির বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগে দ্বিতীয় মামলাটি করে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। তারপরদিন ইয়াঙ্গুন শহর অচল করে দিল বিক্ষোভকারীরা।

মিয়ানমার সেনাবাহিনী মঙ্গলবার নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। কিন্তু তাদের প্রতিশ্রুতি নিয়ে সন্দিহান আন্দোলনকারীরা।

ইয়াঙ্গুনের জংশনে বহু পাবলিক বাস আটকে পড়েছে। চালকদের কেউ কেউ সড়ক অবরোধ আন্দোলনে অংশ নিয়েছে বলেও জানানো হয়।

জান্তা সরকারের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখ্যান করে দেশটিতে আয়োজিত সবশেষ বিক্ষোভ এটি। দেশব্যাপী চলমান এ বিক্ষোভে চিকিৎসক, শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীরা অংশ নেন। বর্জন করা হয়েছে সেনাবাহিনীর মালিকানাধীন পণ্য এবং তাদের সেবা।

সড়ক অবরোধের কারণে আন্দোলনকারীরা ‘সুল বুদ্ধ মন্দিরে’ যেতে পারছেন না বলে সমালোচনা করেছেন এক বিক্ষোভকারী। রয়টার্সকে মোং সোয়ং খা বলেন, সড়ক অবরোধ দিবস প্রত্যাহার করে আন্দোলনকারীদের যতদ্রুত সম্ভব আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্রে যেতে সহায়তা করা উচিৎ।

সুলের বিশাল বিক্ষোভে অংশ নেয়ার জন্য লক্ষাধিক মানুষ আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছেন।

সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে জান্তা সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে মিয়ানমারের। আয়োজকদের প্রত্যাশা বুধবারের বিক্ষোভ এ যাবতকালের মধ্যে সর্ববৃহৎ হতে যাচ্ছে।

সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে দেয়া এক বার্তায় অং সান সূ চি’র ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির জ্যেষ্ঠ সদস্য খিন সান্দার নাগরিকদের উদ্দেশে বলেন, লাখ লাখ মানুষের জমায়েতে অংশ নিয়ে সামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করুন।

‘আসুন আমরা গণবিক্ষোভ করি। সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের শক্তি প্রদর্শন করি। সামরিক সরকার আমাদের দেশের ভবিষ্যত ধ্বংস করে দিচ্ছে।’

মঙ্গলবার মিয়ানমারের মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষদূত টম অ্যান্দ্রেজ দেশটিতে বৃহত পরিসরে সংঘাতের তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন। আন্দোলনকারীদের জমায়েতের জায়গায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের পরই তিনি এ সতর্কতা উচ্চারণ করেন।

টম অ্যান্দ্রেজ বলেন, ‘বিক্ষোভকারীরা বিশাল জমায়েতের ঘোষণা দিয়েছে। জমায়েতের জায়গায় বিপুল পরিমাণ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। আমার শঙ্কা এ দুটি বিষয়ে। আমি আতঙ্কিত, সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী বড় ধরনের কোনো অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে দেয় কিনা?’
-বিবিসি