Home Uncategorized ই-কমার্স: কিউকম ও এসপিসি ওয়ার্ল্ড শীর্ষ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

ই-কমার্স: কিউকম ও এসপিসি ওয়ার্ল্ড শীর্ষ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার

প্রতারণার অভিযোগে কিউকম ও এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস নামের দুইটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের বার্তায় জানানো হয়েছে, অনলাইন প্রতারণার মাধ্যমে ব্যাপক পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে কিউকম কোম্পানির মালিক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অপরদিকে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানিয়েছে, তারা একই রকম অভিযোগে এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেসের মালিক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আল আমিন ও পরিচালক শারমিন আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা স্বামী-স্ত্রী।

সম্প্রতি বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মালিক ও শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, ধামাকা ও রিং আইডির শীর্ষ নির্বাহী, মালিক ও পরিচালকদের এর আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এই ধারাবাহিকতায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে কিউকম ও এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেসের প্রধানদের গ্রেপ্তার করা হল।

অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মত এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে পণ্য সরবরাহ না করার অভিযোগ আছে।

কিউকমের মালিক গ্রেপ্তার

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার সোমবার একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, কিউকমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন মিয়ার নামে পল্টন থানায় একটি মামলা হয়েছে। সেই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

”কিউকম করোনাকালীন ব্যবসা শুরু করেছিল। কিউকমের অনেক ক্রেতাই অর্ডার দিয়েও মালামাল না পাওয়ায় প্রতারিত হচ্ছে। একজন ভোক্তা চৌঠা অক্টোবর পল্টন থানায় এই অভিযোগে মামলা করেন। সেই মামলায় রিপন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে”, সংবাদ সম্মেলনে বলেন হাফিজ আক্তার।

মি. আক্তার আরো বলেন, ”করোনাকালীন অনলাইন ব্যবসার খুব দ্রুত প্রসার হয়েছে। প্রতিটি নাগরিকের জীবনের সঙ্গে ই-কমার্স এখন জড়িত। কিন্তু কিছু বড় প্রতিষ্ঠান সেটা যথাযথভাবে পরিচালিত করতে পারেনি। ফলে প্রচুর মানুষ প্রতারিত হচ্ছে”।

কিউকমের বিরুদ্ধেও টাকা দিয়েও পণ্য না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা।

পাওয়া টাকা বা পণ্যের দাবিতে ক্রেতারা ভিড় করার পর আরও কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মতো সম্প্রতি কিউকমও তাদের কার্যালয় বন্ধ করে দিয়েছিল।

দেড় বছর আগে এই প্রতিষ্ঠানটি তাদের কার্যক্রম শুরু করেছিল।

এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেসের মালিক সস্ত্রীক গ্রেপ্তার

সোমবার অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) একটি সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে যে, তারা এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও মোঃ আল আমীন এবং তার স্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শারমীন আক্তারকে অনলাইন ব্যবসায় প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে।

২৬শে অগাস্ট কলাবাগান থানায় দায়ের হওয়া একটি অর্থপাচার মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোঃ হুমায়ুন কবির।

তিনি বলেন, ”বিভিন্নভাবে টাকা আয় করার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন পেশার মানুষের নিকট হতে টাকা সংগ্রহ করে কোম্পানির হিসাব থেকে এক কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করে প্রতারণা করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে।”

এই প্রতিষ্ঠানের বর্তমান গ্রাহক প্রায় এক কোটি বলে সিআইডি জানিয়েছে। এক মাসের মধ্যে তারা প্রায় ৫/৬ কোটি টাকার অর্ডার পায়।

সিআইডি বলছে, ”প্রাথমিক অবস্থায় এসপিসি ওয়ার্ল্ড কিছু পণ্য ডেলিভারি করে সেই গ্রাহকদের দিয়ে তাদের ফেসবুক পেজে ইতিবাচক রিভিউ পোস্ট করিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন করে। পরবর্তীতে অধিক সংখ্যায় অর্ডার ও অগ্রিম অর্থ পেলে তারা পণ্য ডেলিভারি না দিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা শুরু করে।”

সিআইডি জানিয়েছে, আল আমিন ডেসটিনি ২০০০ এর উচ্চ পর্যায়ের টিম লিডার ও প্রশিক্ষক ছিলেন। তিনি ডেসটিনি ও যুবকের আদলেই গড়ে তুলেছেন এসপিসি ওয়ার্ল্ডকে।

এর আগে গত বছরের নভেম্বরে ২৬৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে আল আমীন একবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বলে সিআইডি জানিয়েছে।

সূত্র: বিবিসি