Home Uncategorized একালের রবিনসন ক্রুসো

একালের রবিনসন ক্রুসো

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক

ইতালির (Italy) এক ব্যক্তি যিনি দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে সার্ডিনিয়া (Sardina)উপকূলের একটি নির্জন দ্বীপে একা বসবাস করছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি ‘রবিনসন ক্রুসো’(Robinson Crusoe) নামে পরিচিত ৮১ বছরের মাউরো মোরান্দি(Mauro Morandi)কতৃপক্ষের চাপের মুখে পড়ে বুডেলি(Budelli) নামের দ্বীপটি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন ।তিনি একটি উচ্ছেদ নোটিশও পেয়েছেন।তিনি আইল অফ বুডেলির একমাত্র বাসিন্দা ছিলেন। ১৯৮৯ সাল থেকে এই নির্জন দ্বীপে বসবাস করেছিলেন মাউরো। ইতালি থেকে পলিনেশিয়া যাওয়ার পথে তদানিন্তন পি শিক্ষক মাউরো এ দ্বীপের প্রেমে পড়ে যান। সেই থেকে আছেন এখানে।সম্প্রতি তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন তিনি চলে যাচ্ছেন। আশা করছেন গত ৩২ বছর ধরে যেভাবে রেখেছিলেন বুডেলিকে সেভাবেই সুরক্ষিত থাকবে এটি আগামীতেও।

জানা যায়,ইতালিয়ান সরকার এই দ্বীপটিকে একটি জাতীয় উদ্যানে পরিণত করবে তাই মোরান্দিকে কয়েক বছর ধরে উচ্ছেদের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল । একটি প্রতিবেদনে অনুসারে দ্বীপটির মালিক চান যে তিনি লা-ম্যাডডালেনার(La Maddalena)জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ দ্বীপটিকে পরিবেশগত শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দুতে রূপান্তর করতে।তাই মাউরোকে সরাতে চান তাঁরা। এ দিকে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে উদ্যান কর্তৃপক্ষ মাউরো মোরান্দির কুঁড়েঘরকে অবৈধ স্থাপনা হিসেবে উল্লেখ করে। পাশাপাশি আরও জানানো হয়, কেউ মাউরোকে এখান থেকে তাড়াতে চায় না, কিন্তু এখানে থাকার মতো তাঁর কোনো পরিচয় নেই। ভবিষ্যতে কোনো তত্ত্বাবধায়ক প্রয়োজন হলে অবশ্যই তাঁর কথা চিন্তা করবে।ইতালির ভোগবাদ ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর বিরক্ত হয়ে মোরান্দি তাঁর বন্ধুদের নিয়ে কোলাহল থেকে দূরে তথা সভ্যতা থেকে দূরে প্রকৃতির কাছাকাছি একটি নতুন জীবনের যাত্রা শুরু করতে সমুদ্রের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন।এরপর মোরান্দি বুডেলির এই গোলাপী সৈকতে পৌঁছেছেন এবং এই দ্বীপের মালিকের সাথে দেখা করে তিনি তাঁর নৌকা বিক্রি করে দ্বীপটির তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।লা ম্যাডডালেনার জাতীয় উদ্যান থেকে ফ্যাবরিজিও ফোনেসুর মতে, মোরান্দি প্রয়োজনীয় অনুমতি ছাড়াই তাঁর ঝুপড়িতে থাকা শুরু করেছে । তাঁর বর্তমান কুঁড়েঘরটি ছিল একটি রেডিও স্টেশন, এক বিশ্বযুদ্ধের আশ্রয়স্থল।মর্মাহত মোরান্দি একটি সংবাদমাধ্যমে বলেন যে ‘লড়াইটি এবার বাস্তব বলে মনে হচ্ছে’ বলে তিনি লড়াই ছেড়ে দিয়েছেন। এছাড়াও তাঁর সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করে তিনি বলেছিলেন যে তিনি লা ম্যাডডালেনার একটি ছোট ফ্ল্যাটে চলে যাবেন। আরও বলেন তাঁর জীবন খুব একটা পরিবর্তন হবেনা।

তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে মোরান্দি তাঁর জীবনের ফটো এবং ভিডিওগুলি সোশ্যাল মাধ্যমে ভাগ করে নিয়েছেন। হাজার হাজার মানুষ তাঁকে এই দ্বীপে রাখার জন্য আহ্বান জানিয়ে একটি আবেদনে স্বাক্ষরিত হয়েছিল কিন্তু সবই বৃথা গেল।