বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঢাকা: উচ্চ হারের খেলাপি ঋণে জর্জরিত দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপিদের আরও সুবিধা দিতে আইন সংস্কারের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি বলেছেন, ‘খেলাপিদের এক্সিট সুবিধা দিতে ব্যাংক আইন সংস্কারে কাজ করা হচ্ছে, আমরা এটি চাচ্ছি।’
অনেকেই ইচ্ছেকৃত খেলাপি হয়েছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘যারা খেলাপি হচ্ছেন তাদের এক্সিট দিতে হবে। খেলাপি হওয়া ব্যক্তিকে শাস্তি দিলেও তার কোম্পানিকে পুর্নগঠন করা যেতে পারে। কোম্পানির উৎপাদন কার্যক্রম যেন বন্ধ না হয়।’
শনিবার সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্বের প্রকল্প (পিপিপি) বাস্তবায়নে সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে এফবিসিসিআই আয়োজিত সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
বকেয়া কিস্তি পরিশোধে ছাড় এবং পুনঃতফসিলের সুযোগ দেওয়ার পরও ২০২১-২২ অর্থবছরের শেষ মাস জুন শেষে খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এর প্রান্তিকে মার্চ শেষে যা ছিল ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ। এ হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে ব্যাংকিং খাতে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ বেড়ে জুন শেষে খেলাপি ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। গত মার্চে খেলাপি ঋণের স্থিতি ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা।
গত জুন শেষে ব্যাংকিং খাতে মোট বিতরণ করা ঋণের স্থিতি ছিল ১৩ লাখ ৯৮ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা। এত বিপুল খেলাপি ঋণ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৮ জুলাই ঋণ পুনঃতফসিলে ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষেত্রে বড় ছাড় দেয়। এতে পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো ও নগদ এককালীন জমা দেওয়ার হার কমিয়ে ব্যাংকের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে।
এরপর খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের নীতিতে আরও বদল আনা হয় ৪ আগস্ট। নতুন সংশোধনীতে আরও ছাড় দেওয়া যেমন হয়েছে, তেমনি বেশ কিছু ক্ষেত্রে কড়াকড়িও করা হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে খেলাপিদের যাদের মধ্যে ব্যবসায়ী ও শিল্পদোক্তাই বেশি তাদের ঋণের চক্র থেকে বের হওয়ার সুযোগ দেওয়ার প্রসঙ্গে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান।
তিনি বলেন, বর্তমান ব্যাংক কোম্পানি আইনে এরকম কোনো সুযোগ নেই। এজন্য আমরা ব্যাংক কোম্পানিতে সংস্কার এনে খেলাপিদের এক্সিট দিতে চাচ্ছি।
পিপিপি এর প্রক্রিয়া দ্রুত করতেও প্রয়োজনে আইন সংস্কারের কথা বলেছেন তিনি। এফবিসিসিআইয়ের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে তার বক্তব্য তুলে ধরা হয়।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন উদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন পিপিপিএ এর প্রধান নির্বাহী মো. ইব্রাহিম, বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধি মোখলেসুর রহমান, ইডকল এর পরিচালক আব্দুল হক, ইউনাইটেড গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক কায়েস খলিল খান, পিপিএ উপদেষ্টা মোহাম্মদ হাসান হায়দার, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক প্রীতি চক্রবর্তী।