আমরা তিনটি সমস্যা নিয়ে রীতিমত যুদ্ধ করছি: মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী
চট্টগ্রাম: নতুন কেনা মশার ওষুধ ‘মসকুবা’ ছিটানোর মধ্যে দিয়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনা সৃষ্টির লক্ষ্যে ৪১টি ওয়ার্ডে মাসব্যাপী ডোর টু ডোর ক্যাম্পেইন শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।
সোমবার সকালে ৪নং চান্দগাঁও ওয়ার্ডের আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের ১১নং সড়কে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জুম অ্যাপের মাধ্যমে এই ক্যাম্পইন উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
উল্লেখ্য ইতোপূর্বে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ও কীটতত্ত্ববিদ মেয়রের অনুরোধে গবেষণা চালিয়ে মশা নিধনে ব্যবহৃত চসিকের ওষুধ অকার্যকর বলে প্রতিবেদন জমা দেয়। যে কারণে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী’র বিশেষ উদ্যোগে নতুন এই মশার ওষুধ কেনা হলো।
কাউন্সিলর মোঃ এসরারুল হকের সভাপত্বিতে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, বর্জ্য স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মোবারক আলী, আশরাফুল আলম, কাজী নুরুল আমীন মামুন, চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, জোন প্রধান আফিয়া আক্তার, স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট জাহানারা ফেরদৌস, অতিরিক্ত প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী, নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মির্জা ফজলুল কাদের, উপ প্রধান পরিছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী, চাঁদগাও বি-ব্লক আবাসিক সমিতি’র সভাপতি এড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. ইসমাইল, এ-ব্লক সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল মনসুর, ইপসার পক্ষে সানজিদা আকতার, ওয়াল্ড ভিশনের রর্বাট কমল সরকার প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র আরো বলেন, আমি জনগণের সেবক। নগবাসীর মতামতের ভিত্তিতে আমি নগর কার্যক্রম পরিচালনা করতে চাই। এ জন্য নগরবাসীর সহায়তা প্রয়োজন। এখন আমরা তিনটি সমস্যা নিয়ে রীতিমত যুদ্ধ করছি। সমস্যাগুলো হলো করোনা মহামারি, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ। তিনটি সমস্যায় জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি। যদিও চট্টগ্রাম এখনো ডেঙ্গু তেমন তীব্র আকার ধারণ করেনি। তবুও আমরা আগে ভাগে ডেঙ্গুর প্রকোপ যাতে না বাড়ে সে ব্যবস্থা নিতে মাঠে নেমে পড়লাম। নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে আমাদের ১৫’শ আরবান কমিউনিটি ভলান্টিয়ারগণ ডেঙ্গু মোকাবেলায় ডোর টু ডোর ক্যাম্পেইনে নগরবাসীকে সচেতন করতে কার্যক্রম চালাবে। এ কার্যক্রমে নিয়োজিত থাকবে চসিকের পরিচ্ছন্ন সেবক ও কর্মীরা। তবে নগরবাসীকেও আমাদের লোক ও ভলান্টিয়ারদের সহযোগিতা করতে হবে। সার্বিক কার্যক্রম তদারকির জন্য চসিকের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটির তিন সদস্য হলেন প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর মো. মোবারক আলী, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মো. মোরশেদুল আলম চৌধুরী। মেয়র বলেন, আমরা কার্যকর মশার ওষুধ ক্রয়ে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কীটতত্ত্ববিদ ও কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শ ও যাচাই-বাচাই করে নতুন ওষুধ ক্রয় করেছি। এখন নগরবাসীকেও চসিকের পাশাপাশি সচেতন হতে হবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে ফুলের টব, প্লাষ্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাষ্টিকের ড্রাম, মাটির পাত্র, বালতি, ডাবের খোসা, ব্যাটারী সেল, নির্মাণাধীন ভবনে জমে থাকা পানি তিন দিন পর পর ফেলে দিতে হবে। ব্যবহৃত পাত্রের গায়ে লেগে থাকা মশার ডিম অপসারণে পাত্রটি পরিস্কার করতে হবে। অব্যবহৃত পাত্র উল্টে রাখতে হবে যাতে পানি না জমে। এ নির্দেশনা পালনে কোন অবহেলা করা হলে চসিক ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বাড়ি বা আবাসিক গৃহের মালিককে জরিমানার সম্মুখীন হতে হবে।
পরে মেয়র বি-ব্লকের নালা-নর্দমায় নতুন মশার ওষুধ ছিটিয়ে মাসব্যাপী ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন। এ সময় ময়লা পরিস্কার কাজে ব্যবহারের জন্য ওয়ার্ল্ড ভিশনের ছয়টি থ্রি হুইল ভ্যান মেয়র রেজাউল করিমের নিকট হস্তান্তর করা হয়।-সংবাদ বিজ্ঞপ্তি