বিজিআইসি’র প্রতিষ্ঠাতা এম এ সামাদের জন্মশতবার্ষিকী পালিত
আজহার মুনিম শাফিন
কুলাউড়া: বাংলাদেশ জেনারেল ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিআইসি) প্রতিষ্ঠাতা ও দেশের বীমা শিল্পের অন্যতম পথিকৃত, বিশিষ্ট বীমা ব্যক্তিত্ব এম এ সামাদের শততম জন্মদিন পালন করেছে কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ শুভাকাঙ্খিরা।
রবিবার (৫ নভেম্বর) রাতে কুলাউড়ায় জেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম এম এ সামাদের জন্মশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বিজিআইসি’র উদ্যোগে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এম এ সামাদের আদর্শ ও বীমা শিল্পে অবদানের কথা বিশেষভাবে স্মরণ করে বক্তারা বলেন এম এ সামাদ ছিলেন বীমা জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জেনারেল ইনসিওরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিআইসি) প্রতিষ্ঠাতা এম এ সামাদের পুত্র বিজিআইসির চেয়ারম্যান তৌহিদ সামাদ সভাপতির বক্তব্যে বলেন, বর্ণাঢ্য কর্মজীবনের অধিকারী এম এ সামাদ রাষ্ট্রায়ত্ত্ব জীবন বীমা করপোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদ থেকে অবসর গ্রহণের পর ১৯৮৫ সালে বেসরকারি খাতের প্রথম নন-লাইফ বীমা কোম্পানি বাংলাদেশ জেনারেল ইন্সুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন। ব্যক্তি হিসেবে তিনি খুবই আন্তরিক ছিলেন। তিনি আরও বলেন, বাবা সব সময় মানুষদের পাশে থাকতেন ও তাদের সহযোগিতা করতেন। আজ বীমার যেই অবস্থা তৈরি হয়েছে তাতে তার অবদান অপরিসীম। আজ উনার একশতম জন্মদিন আমরা পালন করছি। তাই বিজিআইসির পরিবারবর্গ নিয়েই আমাদের আজকের এই আয়োজন।
এ ছাড়াও তিনি তার মরহুম পিতার স্মৃতি রক্ষার্থে কুলাউড়ায় নিজ জন্মভূমিতে এম এ সামাদ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট গঠন করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান। এর মাধ্যমে শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কুলাউড়াকে এগিয়ে নিতে অবদান রাখবে। তিনি তার পিতার স্মরণে এখন থেকে প্রতিবছর কুলাউড়ায় স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান আয়োজনের আশ্বাস প্রদান করেন।
বিজিআইসি’র জনসংযোগ বিভাগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সালাম মাহমুদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সাবেক এমপি এম এম শাহীন বলেন, বীমা শিল্পের উন্নয়নে এম এ সামাদ বীমা জগতে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ সাইফুদ্দিন চৌধুরী মিন্টু। স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন বিজিআইসি’র অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এম মাসুম, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. এ. আজিজ, ব্যাংক কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান সোহেল, ব্যাংক বীমা অর্থনীতি পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কুলাউড়া সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুল হান্নান, শামীম আহমদ চৌধুরী, সিনিয়র সাংবাদিক এম শাকিল রশীদ চৌধুরী, চৌধুরী আবু সাঈদ ফুয়াদ, উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহফুজ শাকিল। অনুষ্ঠানের শুরুতে এম এ সামাদের কর্মময় জীবনের তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। সভাশেষে কেক কেটে এম. এ. সামাদের জন্মশতবর্ষ উদযাপন করা হয়। পরে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, এম এ সামাদ একাধারে ভাষাসৈনিক, দেশের সেরা বীমা ব্যক্তিত্ব, লেখক ও সংগঠক। তিনি ১৯২৩ সালে সিলেট অঞ্চলের মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। ২০০৫ সালের ১৭ অক্টোবর তিনি মারা যান। তিনি উপমহাদেশের সব চাইতে অভিজাত বিদ্যাপীঠ কলকাতার প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে ১৯৪৫ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে বি.এ. অনার্স ডিগ্রি লাভ করেন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে স্বর্ণপদকসহ বহু পুরস্কারে ভূষিত হন। এরপর তিনি ‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’ নয়াদিল্লীতে সংবাদপাঠ ও অনুবাদকের কাজ করেন। বীমার উপর অনেক বই লিখেছেন তিনি। বইগুলো তার জন্য বয়ে এনেছে অনেক আন্তর্জাতিক সম্মান।